কিডনি রোগ হলে কী কী লক্ষণ হবে শরীরে

3 hours ago 2
কিডনি রোগ একটি জটিল রোগ। যেকোনো স্টেজের জন্যই কিডনি রোগ সম্পর্কে ধারণা অর্জনই হচ্ছে এই রোগ নিরাময়ের মূল শক্তি। কিডনি রোগের লক্ষণগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা থাকলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়। কারও যদি কিডনি রোগের এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে তার জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ব্লাড ও ইউরিন টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। কারণ কিডনি রোগের উপসর্গগুলোর সঙ্গে অন্য স্বাস্থ্য সমস্যার উপসর্গের মিল আছে। জেনে নেওয়া যাক কিডনি রোগের উপসর্গগুলো— শরীরে শক্তি কমে ক্লান্তি অনুভব করা কিডনির কর্মক্ষমতা যখন মারাত্মকভাবে কমে যায়, তখন রক্তে অপদ্রব্য হিসেবে টক্সিন উৎপন্ন হয়। এর ফলে আপনি দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব করেন এবং যেকোনো বিষয়ে মনোযোগ দেওয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আরেকটা জটিলতা দেখা দিতে পারে, তা হচ্ছে এনেমিয়া। রক্তস্বল্পতার কারণেও দুর্বলতা বা অবসাদগ্রস্ততার সমস্যা হতে পারে। ঘুমের সমস্যা যখন কিডনি রক্ত পরিশোধন করতে অপারগ হয়, তখন রক্তের টক্সিন প্রস্রাবের মাধ্যমে বাহির হতে পারে না বলে রক্তেই থেকে যায়, যার কারণে ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। অবেসিটি বা স্থূলতার সঙ্গে ক্রনিক কিডনি ডিজিজের যোগসূত্র আছে। এবং নিদ্রাহীনতা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের একটি সাধারণ উপসর্গ। ত্বক শুষ্ক হওয়া ও ফেটে যাওয়া সুস্থ কিডনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বাহির করে দেয়, লাল রক্তকণিকা তৈরি করে, হাড়কে শক্তিশালী করে এবং খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে। শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া ত্বক খনিজ ও হাড়ের অসুখের জন্য ও হতে পারে, যা অ্যাডভান্স কিডনি রোগের সহগামী হিসেবে থাকতে পারে; যখন কিডনি রক্তের পুষ্টি উপাদান ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে না। ঘন ঘন প্রস্রাব যদি আপনার প্রায়ই মূত্রত্যাগের প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে রাতের বেলায়, তাহলে এটা কিডনি রোগের লক্ষণ। যখন কিডনির ছাঁকনিগুলো নষ্ট হয়ে যায়, তখন প্রস্রাবের বেগ বাড়ে। ঘন ঘন মূত্রত্যাগ ইউরিন ইনফেকশনের ও লক্ষণ হতে পারে, পুরুষের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্লেন্ড বড় হয়ে গেলেও এই উপসর্গ দেখা দেয়। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া সুস্থ কিডনি সাধারণত ব্লাড সেলগুলোকে শরীরের ভেতরে রেখে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ মূত্র হিসেবে বের করে দেয়। যখন কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন ব্লাড সেল বের হতে শুরু করে। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়ার এই লক্ষণটির কিডনি রোগের সঙ্গে সঙ্গে টিউমার, কিডনি পাথর বা ইনফেকশনেরও ইঙ্গিত হতে পারে। প্রস্রাবে বেশি ফেনা প্রস্রাবে অনেক বেশি ফেনা দেখা দিলে বুঝতে হবে যে প্রস্রাবের সঙ্গে প্রোটিন যাচ্ছে। ডিমের সাদা অংশ ফাটানো হলে যেমন ফেনা বা বাবেল হয় প্রস্রাবের এই বুদবুদ ও ঠিক সেই রকম। প্রস্রাবে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিনের উপস্থিতির জন্যই এমন হয়। কিডনির ফিল্টার ড্যামেজ হয়ে গেলে প্রোটিন লিক হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয় বলে প্রস্রাবে ফেনা দেখা দেয়। পায়ের গোড়ালি ও পাতা ফুলে যাওয়া কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায় ফলে পা এবং গোড়ালি ফুলে যায়। পায়ের নিচের অংশ ফুলে যাওয়া হার্ট, লিভার ও পায়ের শিরার দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার লক্ষণ ও হতে পারে। চোখের চারপাশে ফোলা যখন কিডনি অনেক বেশি লিক করে, তখন প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায় বলে চোখের চারপাশে ফুলে যায়।
Read Entire Article