কিশোরকে লাঠি দিয়ে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা

1 month ago 22

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছ থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে এক কিশোরকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় রায়হান কবির নামের যুবদলের এক নেতা বাদী হয়ে ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) জেলা প্রশাসকের কাছে মামলা করতে অনুমতি চান রায়হান।

মারধরের শিকার কিশোর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর। বাদী রায়হান কবির উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং মোবারকপুর গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিরত উপলক্ষে গত ২৪ মার্চ দুপুরে বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়নের দুই হাজার ৩৭ জন উপকারভোগীর মাঝে জনপ্রতি ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। সেখানে চাল নিতে আসা উপকারভোগীরা সিরিয়াল না মানায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এছাড়া চাল পাচার হচ্ছে এমন খবর পেয়ে ইউএনও রুয়েল সাংমা সেখানে উপস্থিত হন।

অভিযোগ উঠেছে, ইউএনও পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে উপকারভোগী এক কিশোরকে মারধর করেন। ঘটনার পাঁচ মাস পর রোববার (১০ আগস্ট) উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান এ নিয়ে আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান।

এ বিষয়ে বাদী রায়হান কবির বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। ইউএনও ওইদিন দুপুরে পুলিশ নিয়ে পরিষদে উপস্থিত হয়ে পুলিশের কাছ থেকে রুল (লাঠি) নিয়ে ওই কিশোরকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়ে যান। আমরা চেষ্টা করেও তাকে প্রতিহত করতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘একজন নিরীহ নাগরিককে সরকারি আমলা হয়ে তিনি মারধর করতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে মামলা করেছি।’

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী কিশোর বলে, ‘ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার সময় আমি মায়ের কার্ডের ভিজিএফের চাউল আনতাম যাই। পরে লোকজনের ঠেলা-ধাক্কায় পরিষদের সামনে দেওয়া বাঁশের বেড়া খুইল্লাগা গেলে আমি সামনে গিয়া পইরা যাই। এমন সময় ইউএনও স্যার আইয়া আমারে মারধর করে। পরে আমারে চারটা পর্যন্ত আটকাইয়া রাইখ্খা একটা কাগজে স্বাক্ষর রাইখ্খা ছাইড়া দিছে। আমি গরিব মানুষ, কোনো চাউল লুটপাট করার লোক না।’

এ বিষয়ে ইউএনও রুয়েল সাংমা বলেন, ‘আমি কাউকে মারধর করিনি। এটা আমাকে নিয়ে বিভিন্ন মহলের চক্রান্ত চলছে। রমজানের ঈদের সময় কিছু বিশৃঙ্খল জনতা ভিজিএফের মালামাল লুট করে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে আমরা ধরছি। ধরার পরে তারা আমার সঙ্গে উদ্যত আচরণ করে। আমি তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তাকে ক্যাপচার করছি। ওখানে পুলিশ বা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছিল না। তবে আমি কাউকে মারধর করিনি।’

জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে ময়মনসিংহ বিভাগী কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ আজ দুপুর দুইটার দিকে বলেন, ‘গত রোববার এ নিয়ে একটি ডাক ফাইল কার্যালয়ে এসেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রক্রিয়াধীন।’

এইচ এম কামাল/এসআর/এমএস

Read Entire Article