কিশোরগঞ্জের ৪ ইউনিয়নে ক্যান্সারে আক্রান্ত ১৩৩

3 months ago 37

বাংলাদেশে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৫৬ জন ও মৃত্যুর সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৯৮ জন বলে উল্লেখ করা হয়।। তবে সঠিক ও পূর্নাঙ্গ তথ্য বাংলাদেশে ছিলনা। তাই বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্যানসারের পরিস্থিতি নির্ণয়ে করা হয়েছে ক্যান্সার রেজিস্ট্রি।

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর এলাকার ৪ ইউনিয়নের ২৭ হাজার ৭৮৭ টি বাড়ির ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৭৫ জনকে ক্যানসার রেজিস্ট্রির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথঅ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের গবেষকরা। রেজিস্ট্রিকৃতদের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩৩ জন।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগের বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এই গবেষণায় প্রধান গবেষক হিসেবে ছিলেন, বিএসএমএমইউর পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান। এই গবেষণায় অর্থায়ন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি)ও বিএসএমএমইউ।

এই রেজিস্ট্রি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার পুমদি, শাহেদল, আড়াইবাড়িয়া, এবং গোবিন্দপুর ইউনিয়নে পরিচালনা করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে এটি পরিচালিত হয়।

গবেষকরা জানান, এই গবেষণায় ইন্টারনেট ভিত্তিক বিশেষভাবে তৈরি করা ক্যানসার রেজিস্ট্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি বাড়ি পরিদর্শন করে সাক্ষাৎকার নেওয়ার মাধ্যমে গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

গবেষণায় উঠে আসে, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মাঝে ক্যান্সারের হার সবচেয়ে বশি। নারীদের মধ্যে স্তন ক্যানসার হার সবচেয়ে বেশি ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ। শীর্ষ অন্যগুলোর মধ্যে রয়েছে জরায়ুমুখ ১২ দশমিক ৩ শতাংশ, ঠোঁট ও মুখগঙ্গার ১০ দশমিক ৮ শতাংশ, থাইরয়েড ৭ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ওভারির ক্যান্সার ৪ দশমিক ৬৯ ক্যান্সার।

গবেষকরা জানান, ক্যান্সার আক্রান্ত ৭৩ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষের মধ্যে নিয়মিত ধূমপান, ৪১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন এবং ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ ও ৭৫ দশমিক ৪ শতাংশ নারীর মধ্যে নিয়মিত পানসুপারি খাওয়ার ইতিহাস রয়েছে।

এছাড়া ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১৩ শতাংশ শুধু কেমোথেরাপি, ১১ দশমিক ৩ শতাংশ শুধু সার্জারি, ২ দশমিক ৩ শতাংশ শুধু রেডিওথেরাপি, ৯ দশমিক ৭ শতাংশ শুধু প্যালিয়েটিভ সেবা, ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ উল্লিখিত সবগুলোর একের অধিক সেবা গ্রহণ করেছেন। রেজিস্ট্রিকৃত ক্যান্সার রোগীর ৪ দশমিক ৫ শতাংশ কোনো প্রকার চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন নি।

গবেষকদের সুপারিশ:

এই জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যানসার রেজিস্ট্রি সক্রিয় রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

ক্যানসার রোগীদের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

ক্যানসার ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসূচির ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। এই রেজিস্ট্রি ব্যবহার করে ভবিষ্যতে ক্যানসার গবেষণা পরিচালনা করতে গবেষকদের উৎসাহিত করতে হবে।

এএএম/এসআইটি/এমএস

Read Entire Article