ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে কুমার নদে ঐতিহ্যের নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নৌকাবাইচ দেখতে নদের দুই পাড়ে বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ ভিড় জমায়। সকাল থেকে সারাদিন চলে গ্রামীণ মেলা।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাইচে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ছোটবড় মিলিয়ে বাইচে অন্তত ২০টি নৌকা অংশ নেয়। এছাড়াও ট্রলার ও ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের কমপক্ষে এক হাজারের মতো নৌকায় চড়ে মানুষ এ উৎসব উপভোগ করেন।
নৌকাবাইচ দেখতে আসা পাশের চতুল ইউনিয়নের বাইখীর গ্রামের মানোয়ার খান বলেন, ছোটকাল থেকে নৌকাবাইচ ও মেলায় আসি। গেন্ডারী কুশর (আখ) জিলাপি, আমিত্তি এ মেলার খুব জনপ্রিয় খাবার। এবারও মেয়েদের নিয়ে এসেছি। নৌকাবাইচ দেখে মেলা থেকে কেনাকাটা করছি। মেলায় এবার কমপক্ষে চল্লিশ হাজারের মতো মানুষের সমাগম ঘটেছে।
কথা হয় গৃহবধূ শিউলী বেগমের সঙ্গে। তেলজুড়ি গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় বাবার বাড়ি জামাই ও ছেলেকে নিয়ে নৌকাবাইচ ও মেলা উপলক্ষে একদিন আগে বেড়াতে এসেছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, জন্মের পর ছোটকাল থেকে বাবার সঙ্গে মেলায় আসি। প্রতি বছরের মতো এবারও কুমার নদে নৌকাবাইচ ও গ্রামীণ মেলা দেখতে এসেছি। সঙ্গে স্বামী ও ছেলে আছে। ট্রলারে চরে বাইচ দেখলাম। মেলায় কেনাকাটা করলাম। বেশ আনন্দ পেয়েছি।
স্থানীয় সজল শরীফ জাগো নিউজকে বলেন, নৌকাবাইচ ও মেলায় কমপক্ষে দশ গ্রামের মেয়েদের জামাইরা বউ, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছেন। আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন নিয়ে মেতে ওঠেন। এটা অত্র অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহীতে রূপ নিয়েছে। এবার মেলায় প্রায় ছোট-বড় ২০টি বাইচের নৌকা ছাড়াও ট্রলার ও বিভিন্ন ধরনের কমপক্ষে এক হাজারের মতো নৌকায় চড়ে মানুষ এ উৎসব উপভোগ করেন।
মিষ্টি ব্যবসায়ী তৈয়ব মোল্লা বলেন, কয়েক যুগ ধরে এ নৌকাবাইচ ও মেলায় মিষ্টি বিক্রি করতে আসি। এবারও দোকান দিয়েছি। দোকানে, জিলাপি, রসগোল্লা, আমৃত্তি, সন্দেশ, চমচমসহ বিভিন্ন মিষ্টি সামগ্রী রয়েছে। তবে আমিত্তি বেচাকেনাও বেশি হয়।
আয়োজক কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরডিডি গ্রুপের কর্ণধার ও বিএনপি নেতা আজিজুল আকিল ডেভিড শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এন কে বি নয়ন/আরএইচ/এএসএম