কুমিল্লার সড়ক-অলিগলি জলমগ্ন

3 months ago 10

নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাতে কুমিল্লা রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এতে ডুবে গেছে নগরীর প্রধান সড়কসহ অলিগলি। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে জনজীবনে। পানি ঢুকে পড়েছে বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও।

কুমিল্লার সড়ক-অলিগলি জলমগ্ন

শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকে সরেজমিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, টমছম ব্রীজ থেকে কান্দপাড় সড়ক, জেলা স্কুল রোড, কুমিল্লা সিটি কপোরেশনে সমনের সড়ক, রোইসকোর্স, বিসিক শিল্পনগরী, জেলা স্কুল সড়ক, ছাতিপট্টি, কান্দিরপাড়-রাণীর বাজার সড়ক, ঠাকুরপাড়া-অশোকতলা, ছায়া বিতান ও শুভপুরসহ নগরীর নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে গত দুই দিন ধরে দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী।

ছায়া বিতান এলাকার বাসিন্দা সাফিয়া বেগম বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই এলাকায় পানি জমে। আর ভারি বৃষ্টি হলেতো বাসা বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই কষ্ট দেখার যেন কেউ নেই।

কুমিল্লার সড়ক-অলিগলি জলমগ্ন

আনিছুর রহমান নামের এক বাসিন্দা বলেন, অপরিকল্পিত দালান-কোঠা নির্মাণ আর পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা সামান্য বৃষ্টি হলেই নগরীতে প্রধান সড়কসহ অলি-গলি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এতে দুর্ভোগ বাড়ে। এ নিয়ে সিটি করপোরেশনের কোনো চিন্তা নেই। তাদের হেয়ালিপনায় কেটে গেলো গত ১৪ বছর। কিন্তু পৌরসভা থেকে সিটি হয়ে আমরা কি পেলাম?

উত্তর চর্থা এলাকার শিরিনা বেগম নামের এক নারী জানান, গত দুই দিনের বৃষ্টিতে ঘরে হাঁটু সমান পানি। এতে সব কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। যে পরিমান বৃষ্টি হয়েছে এতে পানি জমার কথা নয়। কারণ সিটি করপোরেশন নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করায় পানি আটকে বারবার বাসায় পানি ঢুকছে। আমরা স্থায়ীভাবে এর সমাধান চাই।

কুমিল্লার সড়ক-অলিগলি জলমগ্ন

সাইফুল ইসলাম নামে এক বাসিন্দা বলেন, নগরীর পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন ও নালা তৈরিতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছে সিটি কপোরেশন কর্তৃপক্ষ। অথচ মৌসুমের সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়ক। এমন লোক দেখানো কাজের কি দরকার। এটি রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় আর নিজেদের পকেট ভারি করার ধান্দা।

রিকশা চালক আবুল হোসেন বলেন, ঢাকাসহ অনেক শহরে রিকশা চালিয়েছি। কুমিল্লার মতো এমন আজব শহর কোথাও দেখিনি। সামন্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে যায়। এরপরও পেটের দায়ে গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়। সকালে নজরুল এভিনিউ সড়কে গর্তে পড়ে রিকশার চাকা বাঁকা হয়ে গেছে। এতে দুইশ টাকা জরিমান লেগেছে। অথচ অন্যান্য দিনের মতো আজ সড়কে মানুষ নেই বললেই চলে। ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

কুমিল্লার সড়ক-অলিগলি জলমগ্ন

তবে জলাবদ্ধার বিষয়ে জানতে কুমিল্লা সিটি কপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কুমিল্লা আবহাওয়া কর্মকর্তা ছৈয়দ আরিফুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় শহরে ১৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ বছর এটাই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। কুমিল্লাজুড়ে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া ছিল কোথাও কোথাও। আজও একই অবস্থা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

জাহিদ পাটোয়ারী/এএইচ/এমএস

Read Entire Article