কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলায় যুব সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনায় সমাবেশ মঞ্চ ও একাধিক তোরণ ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে প্রতিপক্ষ পালিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার বালুর মাঠ এলাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম ও যুবদলের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এবং কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনীর নেতাকর্মীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
দলীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনীর অনুসারীরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন উপলক্ষে উপজেলায় যুব সমাবেশের আয়োজন করেন। এ উপলক্ষে সকাল থেকে নেতাকর্মীরা উপজেলা সদরে সড়কের ওপর খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছবি সম্বলিত বেশ কয়েকটি তোরণ নির্মাণ এবং বালুর মাঠে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি করেন। বিষয়টি জানার পর আবুল কালামের অনুসারী যুবদল কর্মী হাসান পাটোয়ারী নেতৃত্বে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ৪০-৫০ জনের একটি গ্রুপ হঠাৎ মঞ্চ ও বেশ কয়েকটি তোরণ ভাঙচুর করেন। এ সময় তাদের বাধা দেওয়া হলে রশিদ আহমেদ হোসাইনীর অনুসারী ৭ কর্মীকে মারধর করা হয়। তাদের মধ্যে সোহাগের অবস্থা গুরুতর। তাকে লাকসামে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের মনোহরগঞ্জে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনীর সমর্থকরা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সুযোগ না দিয়ে আবুল কালাম গ্রুপের লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। তারা এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিকহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তি ও সাংগঠনিক বিচার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনীর অনুসারী উপজেলা স্বেচ্চাসেবক দল নেতা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্প্রাদক আবুল কালাম অনুসারী যুবদল কর্মী হাসান পাটোয়ারীর নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি দল আকস্মিকভাবে সভা মঞ্চে উপস্থিত হয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুরসহ খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে এবং ৫ শতাধিক চেয়ার ভাঙচুর করে। এ সময় বাধা দিলে আমাদের ৭ নেতাকর্মীকে মারধর করে। এদের মধ্যে সোহাগের অবস্থা গুরুতর। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আবুল কালাম অনুসারী মাসুদুল আলম বাচ্চু বলেন, ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী বিএনপির কেউ না। তার দলীয় কোনো পদপদবীও নেই। মনোহরগঞ্জে সভা সমাবেশ করতে হলে তাকে অবশ্যই দলীয় পদধারী হতে হবে এবং উপজেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমতি লাগবে। তাছাড়া তার নেতাকর্মীদের মারধর হামলা ও প্যান্ডেল ভাঙচুরের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আপনি ভিডিও কল দিয়ে দেখেন, আমি বর্তমানে ডাক্তারের চেম্বারে রয়েছি।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপুল চন্দ্র দে বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে এ সময় কাউকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
জাহিদ পাটোয়ারী/জেএইচ