কুমড়ার বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত নড়াইলের নারীরা

শীতের আমেজ নানা রকম ঐতিহ্যবাহী খাবার সঙ্গে নিয়ে আসে। তার মধ্যে একটি হলো কুমড়ার বড়ি। যা একটি মুখরোচক খাবার। কুমড়ার বড়ি তৈরির উপযুক্ত সময় শীতকাল। শীতের আগমনে নড়াইলের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয়েছে কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম। তরকারির স্বাদকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে কুমড়ার বড়ি অতুলনীয়। শীতকাল এই বড়ি তৈরির উপযুক্ত সময়। এখন নড়াইলের বিভিন্ন গ্রামে দিনভর ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। কুমড়ার বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাসকলাইয়ের ডাল আর চালকুমড়া। এর সঙ্গে সামান্য মসলা। বাজার থেকে ডাল সংগ্রহ করে রাতে ভিজিয়ে রাখা হয়। ভেজানো ডাল মেশিনে ভাঙিয়ে তাতে পানি, বাটা চালকুমড়া ও মসলা মিশিয়ে তৈরি করা হয় বড়ির মণ্ড। এরপর টিনের চালে বা কাপড়ে গুটি গুটি করে বড়ি দেওয়া হয়। নরম অবস্থায় এগুলো পাতলা কাপড় বা মাচায় সারি করে রোদে শুকানো হয়। বর্ষাকাল বাদে বাকি মাসগুলোতে কমবেশি কুমড়ার বড়ি তৈরি করা হয়। বছরের ৬ মাস কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায়। শীতকাল কুমড়ার বড়ি তৈরির ভরা মৌসুম। এ সময় গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে কমবেশি কুমড়ার বড়ি তৈরি করা হয়। এ ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবেও গুরুত্ব পাচ্ছে এই কুমড়ার বড়ি। স্থানীয়রা জানান, শীতের সময়

কুমড়ার বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত নড়াইলের নারীরা

শীতের আমেজ নানা রকম ঐতিহ্যবাহী খাবার সঙ্গে নিয়ে আসে। তার মধ্যে একটি হলো কুমড়ার বড়ি। যা একটি মুখরোচক খাবার। কুমড়ার বড়ি তৈরির উপযুক্ত সময় শীতকাল। শীতের আগমনে নড়াইলের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয়েছে কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম। তরকারির স্বাদকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে কুমড়ার বড়ি অতুলনীয়। শীতকাল এই বড়ি তৈরির উপযুক্ত সময়। এখন নড়াইলের বিভিন্ন গ্রামে দিনভর ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা।

কুমড়ার বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাসকলাইয়ের ডাল আর চালকুমড়া। এর সঙ্গে সামান্য মসলা। বাজার থেকে ডাল সংগ্রহ করে রাতে ভিজিয়ে রাখা হয়। ভেজানো ডাল মেশিনে ভাঙিয়ে তাতে পানি, বাটা চালকুমড়া ও মসলা মিশিয়ে তৈরি করা হয় বড়ির মণ্ড। এরপর টিনের চালে বা কাপড়ে গুটি গুটি করে বড়ি দেওয়া হয়। নরম অবস্থায় এগুলো পাতলা কাপড় বা মাচায় সারি করে রোদে শুকানো হয়। বর্ষাকাল বাদে বাকি মাসগুলোতে কমবেশি কুমড়ার বড়ি তৈরি করা হয়। বছরের ৬ মাস কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায়। শীতকাল কুমড়ার বড়ি তৈরির ভরা মৌসুম। এ সময় গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে কমবেশি কুমড়ার বড়ি তৈরি করা হয়। এ ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবেও গুরুত্ব পাচ্ছে এই কুমড়ার বড়ি।

স্থানীয়রা জানান, শীতের সময় কুমড়ার বড়ির চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে বাকিটা বাজারে বিক্রি করেন তারা। এতে নারীরা পরিবারের জন্য বাড়তি উপার্জন করতে পারছেন। নড়াইল শহরের হাটবাড়িয়া গ্রামের বড়ির কারিগর মিনতি বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা ১০-১২ জন নারী বাণিজ্যিকভাবে কুমড়ার বড়ি তৈরি করছি। প্রায় ৩০ বছর ধরে বড়ি তৈরির কাজ করি। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে কমবেশি বড়ি তৈরি করা হয়। আমরা ব্যবসা করি বলে প্রতিদিন ১৫-২০ কেজি ডাল মেশিনে ভেঙে বড়ি বানাই। পাইকারি ২৫০ টাকা আর খুচরা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি।’

আরও পড়ুন
আগাম সবজি চাষে সফল জিসান, চলতি মৌসুমেই বিক্রি সাড়ে ৩১ লাখ
চাঁদপুরে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা 

তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত এই বড়ি তৈরি করে থাকি। ডালের দাম কম থাকলে আমাদের লাভের পরিমাণটা একটু বেশি হয়, আর ডালের দাম বেশি থাকলে লাভ কম হয়। মাসকলাই আর বুটের ডাল দিলে একটু স্বাদ বেশি হয়। অর্ডার দিলে ক্রেতার চাহিদা মতো তৈরি করে দিয়ে থাকি। প্রতিদিন ১০-১৫ কেজি বড়ি বিক্রি করে থাকি। বছরের ৮ মাস কুমড়ার বড়ি তৈরি করি।’

একই গ্রামের মালিনী বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা ডাল ভাঙার জন্য কেজিপ্রতি ২০ টাকা নিই। আমাদের বড়ি অনেকেই বাড়িতে এসে কিনে নিয়ে যান। এ ছাড়া ঢাকা ও খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়। অনেক মানুষ হাটবাড়িয়া গ্রামে এসে বড়ি তৈরির পুরো প্রক্রিয়া দেখে কিনে নিয়ে যান। আমাদের বড়ির সুনাম দিনদিন বাড়ছে।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘শীতে কুমড়ার বড়ি খুবই জনপ্রিয়। ঘরোয়া পরিবেশে কুমড়ার বড়ি তৈরি হয়। স্থানীয় নারীদের হাতে তৈরি এ বড়ি সুস্বাদু হওয়ায় কেবল নিজেরা নয়, উপহার হিসেবেও কিনে নিয়ে যান। গ্রামের নারীরা খুব পরিশ্রম করে ভালো মানের বড়ি তৈরি করেন। আমরা প্রতিবছর এখান থেকেই কিনি। বাজারে অনেক বড়ি পাওয়া যায় কিন্তু হাটবাড়িয়ার বড়ির স্বাদ আলাদা। সম্পূর্ণ ভেজালমুক্ত হওয়ায় চাহিদাও বেশি।’

হাফিজুল নিলু/এসইউ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow