কুড়িগ্রামের ১৬ নদ-নদীতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের মানুষ। তবে পানি কমায় দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) হঠাৎ করে দুধকুমার নদের পানি ১৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কমতে শুরু করেছে তিস্তা, ব্রহ্মপূত্রনদসহ অন্য নদ-নদীর পানিও।
এদিকে পানি কমলেও তিস্তার অববাহিকায় চারটি ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বজরা ইউনিয়নের কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামে তীব্র ভাঙন শুরু হওয়ায় লোকজন বাড়ি সরাতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকেও জরুরি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।
বজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাইয়ুম সরদার জানান, ভাঙন প্রতিরোধে বজরা ইউনিয়নে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারেনি। ফলে চলতি সপ্তাহে ছয়টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে ১০টি বাড়িসহ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এর মধ্যে কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামের শাহজাদি, আশরাফুল, হান্নান, মুকুল, মজিদা ও রোসনার বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে।
এলাকার সাতালষ্কার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা জানান, কাল যে রাস্তা দিয়ে স্কুলে গেছি, আজ সেই জায়গা নদীগর্ভে চলে গেছে। যে কোনো সময় দুটি স্কুল বিলীন হতে পারে।
সাধুয়াদামারহাট গ্রামের ফুলবাবু জানান, নদী আমার দুই বিঘা জমি খেয়ে ফেলেছে। আমার মতো মোফাজ্জল ও আশরাফুলের বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে। সরকারিভাবে নদী ভাঙন রোধে কাজ চাই।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা জানান, ভাঙন কবলিত বজরা ও থেতরাই ইউনিয়ন পরিদর্শন করেছি। জনপ্রতিনিধিদের তালিকা তৈরির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুধকুমার নদের পানি কমলেও জলাবদ্ধতার কারণে নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাস ইউনিয়নের ফান্দের চর ও বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কুটি বামনডাঙ্গা চরে নিচু এলাকার কয়েকটি বাড়িতে পানি উঠছে।
এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ জানান, আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ খবর নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার কোনো তথ্য জানা নেই। তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন সরকার জানান, প্রস্তুতি হিসেবে দুই হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৪৪০ মেট্রিক টন জিআর চাল মজুদ রয়েছে। ক্যাশ টাকা রয়েছে ১৪ লাখ। তালিকা পেলেই সঙ্গে সঙ্গে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
রোকনুজ্জামান মানু/এএইচ/এএসএম