কুয়াকাটার হোটেল নিয়ে আবেদ আলীর পোস্ট, ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ

3 months ago 24

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষাসহ পিএসসির ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে সৈয়দ আবেদ আলীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এর মাঝে কুয়াকাটায় একটি হোটেলের শেয়ার কেনা নিয়ে গত ১৮ মে সৈয়দ আবেদ আলীর দেওয়া পোস্ট নিয়েও পড়েছে শোরগোল।

সোমবার (৮ জুলাই) দেশজুড়ে সৈয়দ আবেদ আলী আলোচনায় আসার পর কুয়াকাটার ওই হোটেল সান মেরিনা কর্তৃপক্ষও নড়েচড়ে বসেছে। তাদের দাবি এই জমিতে এখনও কোনো ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়নি। জমির মালিক আপাতত একজন। মালিকানা দাবি করা সৈয়দ আবেদ আলীর এ হেন কাণ্ডের জন্য আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথাও জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোশারফ হোসেন।

ফেসবুক পোস্টে হোটেল সান মেরিনার প্রস্তাবিত তারকা মানের হোটেলের সাইনবোর্ডের ছবি দিয়ে শেয়ার কিনতে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন আবেদ আলী। সেখানে তিনি ভিত্তিপ্রস্তর করেছেন এমন দাবিও করেন।

তার পোস্টটি ছিল এরকম ‘আমাদের নতুন হোটেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা। সমুদ্রকন্যার পারে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা ও একই সাথে একটা হোটেলের মালিকানা অর্জন করতে আপনিও শেয়ার কিনতে পারেন। শেয়ার কিনতে যোগাযোগ করুন।’

কুয়াকাটার হোটেল নিয়ে আবেদ আলীর পোস্ট, ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সৈয়দ আবেদ আলীর বাড়ি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম বোতলা গ্রামে। তিনি মৃত আবদুর রহমান মীরের ছেলে। ডাসার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার জন্যও তিনি এলাকায় পোস্টার-ব্যানার টাঙিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, পর্যটনকেদ্র পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় রাখাইন মার্কেট রোডে ওই জমিতে কোনো হোটেল এখনও নির্মিত হয়নি। ৪০ শতক জমির চারদিকে সীমানা প্রাচীর রয়েছে যার সঙ্গে সাইনবোর্ডটি টাঙানো রয়েছে। একপাশে একটি টিনসেটের লম্বা ঘরে বেশ কয়েকটি রুম রয়েছে যেখানে ওই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক থাকেন। মাঝে মাঝে রুমগুলো পর্যটকদের কাছে ভাড়াও দেওয়া হয়।

ওই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. ফারুক হোসেন রুবেল বলেন, আমি গত ৮ বছর যাবৎ এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এখানে চাকরি করি। আবেদ আলী নামের এই লোককে কখনও আমাদের মালিকের সঙ্গে দেখিনি। এটার মালিক মোশাররফ হোসেন নামের একজনই, তিনি পেশায় ঠিকাদার। এখানে আমরা শেয়ার বিক্রির সাইনবোর্ড লাগিয়েছি এটা দেখে অনেকে আসে কথা বলে, ছবি তোলে। তবে সে যে মালিকানা দাবি করেছে এটা সম্পূর্ণ ভুয়া। আবেদ আলীও গত ঈদের আগে কুয়াকাটায় আসেন, তখন আমাদের এ শেয়ার নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেছে। শেয়ারের দাম জিজ্ঞেস করছে এবং একটি ছবি তুলে চলে গেছে।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমি ২০১০ সালে জমিটা ক্রয় করি। এখন পর্যন্ত আমি একা এই জমির মালিক, কোনো পার্টনার নেই। আমরা শেয়ার বিক্রির জন্য সাইনবোর্ড লাগিয়েছি তবে এখন পর্যন্ত কোনো শেয়ার বিক্রি হয়নি। আবেদ আলী নামের এই লোককে আমি চিনি না। আমার টাঙানো ছবি দিয়ে দিয়ে তিনি শেয়ারের মালিকানা দাবি করে প্রতারণা করেছেন। আমি এ জন্য ঢাকার গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবো।

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় আলোচনায় এসে গ্রেফতার হয়েছেন সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলে সোহানুর রহমান সিয়াম। সিয়াম গত ১৯ মে কুয়াকাটা সৈকতে তার বাবা আবেদ আলী নামাজ আদায় করছেন এমন ছবি দিয়েও পোস্ট করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, তার বাবা ব্যবসার কাজে কুয়াকাটায় গেছেন।

এরই মধ্যে এই দুইজনসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আসাদুজ্জামান মিরাজ/এসএনআর/জিকেএস

Read Entire Article