কৃষি, গার্মেন্টস ও রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি বলে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতের শুনানিতে মতামত তুলে ধরেছেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের রাহাতপুরের মৌজায় তিন ফসলি কৃষিজমি রক্ষা এবং পূর্বপুরুষ থেকে প্রাপ্ত কৃষিজমির খাজনা আদায় বন্ধ করে বালুমহালে পরিণত করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আপিল শুনানিতে এমন মতামত তুলে ধরেন তিনি।
শুনানি নিয়ে মানিকগঞ্জে শতভাগ উর্বর কৃষিজমি থেকে নির্বিচারে মাটি কেটে লুটের ঘটনায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে কমিটি গঠন করে তদন্ত করার নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত বহাল রেখেছেন।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে মেসার্স প্রিন্স কনস্ট্রাকশনের মালিক বালুমহালের ইজারাদার মোস্তাফিজুর রহমান প্রিন্সের পক্ষে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার জজ আদালত নো অর্ডার দেন।
চেম্বার জজ আদালতে মেসার্স প্রিন্স কনস্ট্রাকশনের মালিক বালুমহালের ইজারাদার মোস্তাফিজুর রহমান প্রিন্সের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুল ইসলাম এবং রিট পিটিশনকারী কৃষকদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব।
আদেশের বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে চেম্বার জজ আদালত নো অর্ডার আদেশ দেন। যার মধ্যে দিয়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ বহাল রইলো। যার ফলে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার রাহাতপুর মৌজার কৃষিজমিকে বালুমহালে পরিণত করা আপাতত বন্ধ রইলো এবং ভূমি মন্ত্রালয়ের সচিবকে স্পেশাল ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করে ওই বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রইলো।
মাটি কাটার পক্ষে আপিল আবেদনকারী আইনজীবীর যুক্তির বিষয়ে শুনানিতে রিটকারীর সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব চেম্বার জজ আদালতের শুনানিতে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি মূলত তিনটি সেক্টর। প্রথমত কৃষি, দ্বিতীয় বাংলার মা-বোনদের সস্তা শ্রমের বিনিময়ে গার্মেন্টস শিল্পের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং তৃতীয় প্রবাসীদের।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় শুধু বালুমহাল নয় , জলমহাল ও পাথরমহালেও দেখেছি। এই রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে কৃষিজমিকে রক্ষা করে দেশের কৃষকদের বাঁচিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য। কিন্তু মাটিখেকোরা কৃষকের ফাসলি জমির উর্বর মাটি কেটে নিচ্ছে।
শুনানিতে রিটকারীর আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৭ এর ক ও ৯ ধারাসহ কৃষিজমি সংরক্ষণসহ সংবিধানকে উপেক্ষা করে মানিকগঞ্জ জেলার প্রশাসন শুধু ভেস্টেড কোয়ার্টারদের স্বার্থরক্ষার জন্য কৃষিজমিকে বালু মহালে পরিণত করার চেষ্টা করছে।
এ পর্যায়ে চেম্বার জজ বলেন, এটা তো প্রেস ক্লাবের বক্তৃতার মতো মনে হচ্ছে। জবাবে সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীনে আসলে দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার এবং রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থানের বিশ্লেষণ করাই রিট পিটিশনের কাজ। এরপর উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে নো অর্ডার দেন চেম্বার জজ আদালত।
এফএইচ/এএমএ/জেআইএম