যুক্তরাষ্ট্রে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) উটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস ইভেন্টে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন চার্লি কার্ক। তিনি বক্তৃতা দেওয়ার সময় তার ঘাড়ে লাগে এবং তিনি মঞ্চের ওপর পড়ে যান। এ সময় অনুষ্ঠানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং লোকজন ছুটোছুটি শুরু করে। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, গুলি লাগার পর কার্কের ঘাড় থেকে রক্ত ঝড়ছে। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান। খবর রয়টার্স, বিবিসি।
চার্লি কার্কের বয়স হয়েছিল ৩১ বছর। তিনি ‘দ্য আমেরিকান কমব্যাক ট্যুর’ নামের রাজনৈতিক সফরের অংশ হিসেবে তরুণদের মধ্যে রক্ষণশীল মূল্যবোধ প্রচার করছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন চার্লি কার্ক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী রক্ষণশীল রাজনৈতিক নেতা এবং টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএর সহ-প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন। উটাহ অঙ্গরাজ্যের গভর্নর এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে ঘনিষ্ট সহযোগীর মৃত্যুর ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘মহান ও কিংবদন্তি চার্লি কার্ক আর নেই। সবাই তাকে ভালোবাসতো, প্রশংসা করত। তিনি এখন আমাদের মাঝে আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের যুবসমাজকে বোঝার বা তাদের হৃদয় জয় করার ক্ষমতা চার্লির চেয়ে বেশি আর কারো ছিল না।
হোয়াইট হাউজ থেকে এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, যারা এই হত্যাকাণ্ডে কিংবা অন্য রাজনৈতিক সহিংসতায় যুক্ত, তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হবে। এমনকি যারা অর্থায়ন বা সহায়তা করছে, তাদেরও।
কার্কের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের সব সরকারি ভবনে রোববার পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সম্ভবত পাশের কোনো ভবনের ছাদ থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছিল।
হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও অপরাধী সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। এফবিআই জানিয়েছে, তারা এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়েছে এবং উটাহর জননিরাপত্তা কমিশনার বউ ম্যাসন জানিয়েছেন, হামলাকারী এখনো পলাতক।
নিহত হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে এক দর্শকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে গণহত্যা নিয়ে আলোচনা করছিলেন কার্ক। চার্লি কার্ক এবং তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় কনজারভেটিভ যুব সংগঠন। ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারে তরুণ ভোটারদের সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল সংগঠনটি। ট্রাম্পও স্বীকার করেছিলেন, তার দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে কার্কের বড় ভূমিকা ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সক্রিয় ছিলেন কার্ক। তার অনুসারীর সংখ্যা ৫৩ লাখের বেশি। পাশাপাশি তিনি জনপ্রিয় পডকাস্ট ও রেডিও শো ‘দ্য চার্লি কার্ক শো’ পরিচালনা করতেন। ফক্স নিউজে তিনি সহ-উপস্থাপক হিসেবেও কাজ করেছেন।
টিটিএন