কেরাতে লোকমা দেওয়া হলে কি সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে?

3 months ago 47

নামাজের কেরাতে কোথাও ইমাম আটকে গেলে মুকতাদিদের তাকে সহযোগিতা করা উত্তম। সহযোগিতার পদ্ধতি হলো মুকতাদি উচ্চস্বরে আয়াতটি শুদ্ধভাবে পাঠ করবে। এটাকে ‘লোকমা’ দেওয়া বলে। কেরাত ছাড়াও নামাজে ওঠা-বসার ক্ষেত্রে কোথাও ইমামের ভুল হলে তাসবিহ পাঠ করে তাকে সতর্ক করাকেও লোকমা দেওয়া বলে।

অনেকে মনে করেন কেরাতে লোকমা দেওয়া হলে সাহু সিজদা দিতে হবে। এ ধারণা সঠিক নয়। সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় নামাজে কোনো ওয়াজিব ছুটে যাওয়া, কোনো ফরজ দুবার আদায় করা, কোনো ওয়াজিব পরিবর্তন করা, কোনো ফরজ বা ওয়াজিব আদায়ে দেরি হওয়া ইত্যাদি কারণে। কেরাতের ভুলে লোকমা দেওয়া হলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। কেরাতের ভুলের সাথে সাহু সিজদা ওয়াজিব হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

কেরাতের যেসব ভুলের কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়, ওইসব ভুল করার পর সাহু সিজদা দিলে নামায শুদ্ধ হবে না বরং পুনরায় নামাজ আদায় করতে হবে। পক্ষান্তরে কেরাতে যদি কোনো সাধারণ ভুল হয় কিংবা বড় ভুল হলেও লোকমা দেওয়ার পর ইমাম ওই রাকাতেই তা ঠিক নেন তাহলে নামাজের ক্ষতি হবে না।

কেরাতের যে ভুলে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়
নামাজের কেরাতে যদি এমন গুরুতর কোনো ভুল হয় যে ভুলের কারণে আয়াতের বক্তব্য পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং ইমান-বিরোধী কোনো অর্থ সৃষ্টি হয়, তাহলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তবে ভুল করার পর ওই রাকাতেই কোনো মুকতাদির লোকমা শুনে বা নিজে থেকেই ইমাম বা একা নামাজ আদায়কারী যদি ভুল ঠিক করে আয়াতটি শুদ্ধভাবে পড়েন, তাহলে নামাজ শুদ্ধ হবে। ওই রাকাতে আয়াতটি শুদ্ধ না করলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। পরবর্তী রাকাতে শুদ্ধ করে পড়লে বা সাহু সিজদা দিলেও নামাজ শুদ্ধ হবে না।

গুরুতর ভুলের উদাহরণ হলো, কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,
فَاَمَّا مَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُهٗ فَهُوَ فِیۡ عِیۡشَۃٍ رَّاضِیَۃٍ
অর্থ: যার নেকের পাল্লা ভারি হবে, সে সুখী জীবন যাপন করবে। (সুরা কারিয়া: ৬, ৭)

কেউ যদি নামাজের কেরাতে আয়াতটিকে পরিবর্তন করে এ রকম পড়ে,
فاما من ثقلت موازینه فامه هاویه
অর্থ: যার নেকের পাল্লা ভারি হবে, তার আবাস হবে হাবিয়া জাহান্নাম।

তাহলে অর্থ পুরোপুরি বিপরীত ও ইমান বিরোধী হয়ে যাওয়ায় এটা গুরুতর ভুল গণ্য হবে এবং ওই রাকাতে ভুলটি শুদ্ধ না করলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।

ওএফএফ/এমএস

Read Entire Article