বুধবার সকাল থেকেই ক্রিকেট পাড়ার খবর, প্রধান সহকারী কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। যদিও কোচ সালাউদ্দিন নিজে কোথাও আনুষ্ঠানিকভাবে এমনটা জানাননি। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজকে’ আগের রাতেই সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি জাতীয় দলের প্রধান সহকারি কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চাচ্ছেন বা সড়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। মূলতঃ ক্রিকবাজকে উদ্ধৃত করেই মিডিয়ায় খবর ছড়িয়েছে যে, সালাউদ্দিন আর জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে থাকবেন না। পদত্যাগ করবেন।
বেলা গড়ানো সাথে সাথে খবরের ডালপালা গজালো। সালাউদ্দিনও অন্য মিডিয়ায় জানিয়ে দিলেন, হ্যাঁ, আমি আর জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে থাকবো না। সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
দুপুরের ঠিক আগে জাগো নিউজের সাথে ছোট্ট মুঠোফোন আলাপে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল সুদুর দুবাই থেকে হোয়াটসআপের ভয়েস ম্যাসেজে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে, সালাউদ্দিন পদত্যাগ করেছেন। বিসিবি বিগ বস জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন যে, ‘হ্যাঁ, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন রেজিগনেশন (পদত্যাগ পত্র) দিয়েছে।’
এদিকে বিকেল থেকে আবার অন্য গুঞ্জন; সেটা হলো বিসিবি নাকি সালাউদ্দিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি। পদত্যাগ পত্র গ্রহণ না করার অর্থ হলো, বিসিবি চায় না সালাউদ্দিন পদত্যাগ করুক।
খুব স্বাভাবিকভাবেই এমন খবরে বেশ খানিকটা সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় ছিল এবং একটা ধুম্রজালও সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে বুধবার ঠিক সন্ধ্যার পর বিসিবি থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। সেখানে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, বিসিবি সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে তিনি (সালাউদ্দিন) আর জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ না করার কথাও জানিয়ে দিয়েছেন।
বিসিবি পরিচালক ও জাতীয় দল পরিচালনা, পরিচর্যা ও এর তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিমের উদ্ধৃতি দিয়ে বিসিবির বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘সালাউদ্দিন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের পর আর জাতীয় দলের হয়ে কাজ না করার কথা জানিয়েছেন। আমরা (বিসিবি) নিজেরা কথা বলে এ ব্যাপারে আমাদের ভাষ্য জানাবো পরে।’
এদিকে অনেকেরই ধারনা বিসিবি সালাউদ্দিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি। কিন্তু বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেচার শাহরিয়ার নাফীস জানিয়েছেন, পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা বা না করার প্রশ্নই আসে না। কারণ, সালাউদ্দিন ভাইতো পদত্যাগ পত্র বিসিবিতেই (ক্রিকেট অপসে) জমাই দেননি।
এদিকে একটা বিষয় অনেকেই আমলে আনছে না যে, সাধারণতঃ জাতীয় দলের কোন কোচিং স্টাফ পদত্যাগ পত্র দিলে সেটা দেবেন বিসিবি সিইও বরাবর। কেউ কেউ সরাসরি সভাপতির কাছেও পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেন। তার একটা কপি হয়তো ক্রিকেট অপসেও ফরোয়ার্ড করতে পারেন।
কিন্তু যেহেতু বিসিবি প্রধান আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সিইও দুজনই দেশের বাইরে, তাই মেইল আর হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়া সালাউদ্দিনের কারো হাতে পদত্যাগ পত্র জমা দেয়ার কোনো সুযোগও নেই। তাই শাহরিয়ার নাফীস বলেছেন, সালাউদ্দিন ভাইতো আমাদের কাছে (ক্রিকেট অপসে) পদত্যাগ পত্র জমাই দেননি। গ্রহণ না করার প্রশ্ন তোলা অবান্তর।
প্রসঙ্গতঃ আইসিসির সভায় যোগ দিতে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল আর প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন বর্তমানে দুবাই অবস্থান করছেন।
বিসিবি থেকে আজ সন্ধ্যায় সালাউদ্দিনের পদত্যাগ সম্পর্কিত যে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে, সেখানেও সুস্পষ্ট বলা আছে, ‘বিসিবি সিইওর কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন সালাউদ্দিন।’
তাই বিসিবি সালাউদ্দিনের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেনি, তা এখনই বলার অবকাশ নেই। এটা বিসিবি সভাপতি ও সিইও আইসিসির মিটিং শেষে দেশে ফেরার পর বোঝা যাবে।
গত বছর (২০২৪) এর নভেম্বরে জাতীয় দলের প্রধান সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। এর আগে ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সহকারী ও ফিল্ডিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ২০১০ থেকে ২০১১ পর্যন্ত বিসিবি ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমিতে বিশেষজ্ঞ কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এআরবি/আইএইচএস

13 hours ago
4









English (US) ·