চলতি ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়ায় এডুকেশন কোটা (ইকিউ-১ ও ইকিউ-২) ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন নির্দেশনা দিয়েছে একাদশে ভর্তির কেন্দ্রীয় কমিটি ও ১১টি শিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ে গঠিত আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
রোববার (২৪ আগস্ট) জারি করা এক চিঠিতে বলা হয়, এই কোটায় মনোনীত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রত্যয়নপত্র দাখিল বাধ্যতামূলক।
একাদশে ভর্তি কমিটির সদস্যরা জানান, শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য নির্ধারিত এ কোটায় আবেদন করে ভর্তি হতে প্রত্যয়নপত্র লাগবে। এ প্রত্যয়নপত্র না থাকলে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হলেও চূড়ান্ত ভর্তির সময় সেই প্রার্থী বাদ পড়বেন। কিন্তু অনেক সাধারণ প্রার্থী ভুয়া তথ্য-পরিচয় দিয়ে চতুরতার সঙ্গে এ কোটায় অনেক শিক্ষার্থী আবেদন করেছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে আবেদনে ইকিউ-১, ইকিউ-২ (এডুকেশন কোটা-১, ২) কোটার ক্ষেত্রে নির্ধারিত যোগ্যতা থাকতে হবে। ইকিউ-১-এ আবেদনের যোগ্যতার ক্ষেত্রে এ কোটায় আবেদনকারী শিক্ষার্থীকে অবশ্যই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সরাসরি কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তান হতে হবে।
- আরও পড়ুন
- জিপিএ-৫ পেয়েও প্রথম ধাপে কলেজ পাননি পৌনে ৬ হাজার শিক্ষার্থী
- প্রথম দফায় ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীও পায়নি ৩৭৮ কলেজ
এতে আরও বলা হয়, ইকিউ-২ এর যোগ্যতার ক্ষেত্রে এ কোটায় আবেদনকারী শিক্ষার্থীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ নির্ধারিত ২৮টি দপ্তর, সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তান হতে হবে। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আওতাধীন সরকারি স্কুল, সরকারি কলেজ, সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সরকারি শিক্ষা অফিসগুলোতে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানের ক্ষেত্রে এ কোটা সুবিধা পাবেন।
চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ইকিউ-১ ও ২ কোটার প্রার্থীদের অনলাইনে ভর্তির আবেদনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ কোটায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তির সময় সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে। সেক্ষেত্রে এ কোটার সঠিক প্রমাণ জমা দিতে ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে না।
কোটার জন্য বিবেচিত না হওয়া পরেও আবেদন করাদের আবেদন বা নিশ্চায়ন বাতিল করার পরামর্শ দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, যেসব প্রার্থী যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও আবেদন করেছেন, তাদেরকে সংশ্লিষ্ট বোর্ডে গিয়ে আবেদন বা নিশ্চায়ন বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের ফের আবেদন করার জন্য বলা হয়েছে।
ইকিউ-১ কোটা পাবেন শুধুমাত্র শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সরাসরি কর্মরত সচিব, অতিরিক্ত সচিব, উপসচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব, সহকারী সচিব ও অন্যান্য বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী।
ইকিউ-২ কোটা পাবেন যারা
ইউজিসি, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল, মাউশি অধিদপ্তর, এনটিআরসিএ, ব্যানবেইস, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট, এনসিটিবি, নায়েম, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ জাতীয় ইউনেস্কো কমিশন (বিএনসিইউ), ১১টি শিক্ষা বোর্ড, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার)।
গত ৩০ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত একাদশে প্রথম ধাপে ভর্তির আবেদন নেওয়া হয়। এ ধাপে ১০ লাখ ৭৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেন। তাদের মধ্যে ১০ লাখ ৪৭ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী কলেজ পাননি। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া পৌনে ৬ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
যারা প্রথম ধাপে কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়নি এবং আবেদন করেনি; তারা দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন। দ্বিতীয় ধাপে আবেদন শুরু হয়েছে শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৯টায়, যা চলবে সোমবার (২৫ আগস্ট) রাত ৮টা পর্যন্ত। এরপর তৃতীয় ধাপে আবেদন নেওয়া হবে। তিন ধাপের ফল প্রকাশ, নিশ্চায়ন, মাইগ্রেশনের পর চূড়ান্ত ভর্তি নেওয়া হবে। ভর্তি চলবে ৭-১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর পরের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে।
এএএইচ/এনএইচআর/জিকেএস