জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়েছে তার দোসররাও পালিয়েছে মন্তব্য করে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেছেন, আওয়ামী লীগের যারা চাঁদাবাজি করতো, দখলদারি করতো তারা পালিয়েছে তাদের স্থানে অন্য একটা দল দায়িত্ব নিয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরও কোথাও চাঁদাবাজি দখলদারি বন্ধ হয়নি, কেবল হাতবদল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘সড়ক পরিবহনে চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল’ থেকে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদ এ বিক্ষোভ করে।
মিছিলটি গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
আবু হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর চাঁদাবাজি, দখলদারি করেছে। তারা পালালেও তাদের স্থানে অন্য একটা দল দায়িত্ব নিয়েছে। তিনি বলেন, যারা নিজেদেরকে নব্য চাঁদাবাজ ও দখলদার হিসেবে আবির্ভাব করেছেন তাদের আওয়ামী লীগের পতন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। গতকাল ঢাকা থেকে নাটোরগামী বাসে ডাকাতি হয়েছে, সেখানে দুজনকে ধর্ষণও করা হয়েছে এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি ও হত্যার মত ঘটনা ঘটছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দৃশ্যত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও উন্নতি হচ্ছে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন এমন প্রশ্ন রেখে হানিফ বলেন, তিনি বেঁচে থাকলে তো কিছু দৃশ্যমান কিছু ব্যবস্থা নিতেন। কোনো কোনো দল আগে জাতীয় নির্বাচন চাচ্ছেন, পরে স্থানীয় নির্বাচন চাচ্ছেন। কিন্তু দেশের জনগণ মনে করল আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত। আমরাও মনে করে আগে স্থানীয় নির্বাচন তারপর জাতীয় নির্বাচন হোক। স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে এই নির্বাচন কমিশনের ফিটনেস যাচাই করা যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের পরে জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকার, ট্রেড ইউনিয়ন এমনকি জাতীয় মসজিদ থেকেও ফ্যাসিবাদের দোসররা পালিয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে, কিন্তু ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রমিক ফেডারেশন সমূহে নির্বাচনের পরিবর্তে পুনরায় অনির্বাচিত চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়েছে। চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট উচ্ছেদ ও নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ শ্রমিকদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচারী আমলের মতো নির্দিষ্ট একটি সিন্ডিকেটের দ্বারা ঢাকা মহানগরের মহাখালী, গাবতলী, সায়দাবাদ, ফুলবাড়িয়াসহ সারাদেশে পরিবহনে চাঁদাবাজির ভুক্তভোগী মূলত খেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষেরা। জুলাই বিপ্লবের সুফল পেতে হলে অবশ্যই চাঁদাবাজি নির্মূল করতে হবে।
শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুক, গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য নিজাম উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ হোসেন, শ্রমিক অধিকার পরিষদ গাজীপুর জেলার সভাপতি রবিন মিয়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতা রুবেল, পরিবহণ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আল আমিন প্রমুখ।