কোরবানির মাংস বণ্টন ও সমাজের ভাগ

3 months ago 23

নিজের কোরবানির মাংস খাওয়া ও অভাবীদের খাওয়ানো ঈদের দিনের একটি বিশেষ আমল। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,

فَکُلُوۡا مِنۡهَا وَ اَطۡعِمُوا الۡقَانِعَ وَ الۡمُعۡتَرَّ

তোমরা তা থেকে খাও এবং খাওয়াও মানুষের কাছে হাত পাতে না এমন অভাবীদের এবং চেয়ে বেড়ায় এমন অভাবীদের। (সুরা হজ: ৩৬)

তাই কোরবানির মাংস চাইতে আসা ভিক্ষুকদের যেমন কিছু মাংস দান করা উচিত, কোরবানি দিতে পারেনি এমন আত্মীয়-স্বজন-প্রতিবেশীদের কথাও বিশেষভাবে মনে রাখা উচিত, তাদের ঘরেও কোরবানির মাংস পাঠানো উচিত। যেন ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই ঈদের আনন্দে শরিক হতে পারে।

কোরবানির মাংস তিন ভাগ করে এক অংশ সদকা করা, এক অংশ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও দরিদ্র প্রতিবেশীদের দেওয়া আর এক অংশ নিজের জন্য রাখা মুস্তাহাব বা উত্তম। কিন্তু এটা কোনো জরুরি বা আবশ্যক আমল নয়। উপরোক্ত তিন ভাগ সমান করাও জরুরি কিছু নয়।

অনেক মানুষ মনে করে, কোরবানির মাংস তিন ভাগে বণ্টন করা জরুরি এবং এতে সামান্য ত্রুটি করলেও কোরবানি হবে না। সাথে এটাও মনে করে, এ বণ্টন হতে হবে মেপে মেপে। এ তিন ভাগ ওজনে সমান হতে হবে, কোনো কমবেশি চলবে না। এ ধারণা সঠিক নয়।

কোরবানিতে সমাজের ভাগ
আমাদের দেশের অনেক এলাকায় সমাজের সবাই মিলে এক সাথে কোরবানি করার নিয়ম চালু আছে। ওইসব এলাকায় যারা কোরবানি করে, তাদের প্রত্যেককেই বাধ্যতামূলকভাবে কোরবানির একটি অংশ ‘সমাজের ভাগ’ হিসেবে দিতে হয় এবং তা দরিদ্র ও অভাবীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়।

কোরবানির মাংস অভাবীদের দান করা নিঃসন্দেহে ঈদুল আজহার একটি মুস্তাহাব আমল ও অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। কিন্তু মনে রাখতে হবে এটা কোরবানিদাতার ঐচ্ছিক ও ব্যক্তিগত আমল। কোরবানিদাতা তার ইচ্ছা অনুযায়ী তার কোরবানির মাংস বণ্টন করবেন; নিজে রাখবেন, আত্মীয়দের দেবেন বা দরিদ্রদের দান করবেন। এ ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে কোনো ভাগ চাপিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, এটা নাজায়েজ।

তাই সমাজের সব মানুষের কাছে কোরবানির মাংস পৌঁছে দেওয়ার এ সব আয়োজনে অংশগ্রহণ করা ঐচ্ছিক থাকা জরুরি এবং অংশগ্রহণকারীদের গরুর কোনো নির্ধারিত অংশ দেওয়ার নিয়ম না থাকাও জরুরি। কোরবানিদাতাদের দান করতে উৎসাহ দেওয়া যেতে পারে, তারা স্বেচ্ছায় যতটুকু দেবেন, ততটুকুই সমাজের পক্ষ থেকে দরিদ্রদের মধ্যে বিরতণ করা যেতে পারে।

ওএফএফ/জিকেএস

Read Entire Article