সাফিনাতুন জাহান সাবরিন
চট্টগ্রাম শহরে কী নেই? স্রষ্টা যেন নিজ হাতেই সাজিয়েছেন। পাহাড়, সমুদ্র, ঝরনাসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর চট্টগ্রাম। এ শহরে যিনি আসবেন; তিনি এ শহরের সৌন্দর্যের প্রেমে পড়তে বাধ্য হবেন। ভ্রমণপিপাসুদের কাছে চট্টগ্রাম শহর ভালো লাগার অন্যতম কারণ সমুদ্র। সমুদ্র কার না ভালো লাগে? ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বরাবরই সমুদ্র প্রিয় একটি জায়গা। যেখানে গেলে মন ভালো হয়ে যায়। যত দুঃখ-কষ্ট আছে নিমিষেই চলে যায়। আর সেটি যদি হয় নডালিয়া সমুদ্রসৈকত; তাহলে তো কথাই নেই।
যেখানে নীল আকাশ মিশে গেছে সমুদ্রের স্বচ্ছ নীল জলে। যেখানে প্রকৃতি নীরবে কথা বলে। যেখানে নেই মানুষের ভিড়। নেই কোনো কোলাহল। এটি চট্টগ্রাম শহরের সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত। সৈকতটি যেন এক অনাবিষ্কৃত স্বর্গ, যা এখনো পর্যটকের কোলাহলে ক্লান্ত হয়নি। সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন জাগায় আত্মার গভীরতম অনুভব।
নডালিয়ায় সমুদ্রের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য তার সীমাহীন বিস্তৃতি। যতদূর চোখ যায়, দেখা মেলে বিশাল আকাশ আর নীল জলরাশির মেলবন্ধন। সমুদ্র যেন তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে, এসো আমার কাছে, হারিয়ে যাও আমার গভীরতায়। সমুদ্রের একেকটা ঢেউ যেন একেকটা গল্প। সমুদ্রের প্রতিটি গর্জন যেন একেকটা নীরব গল্প।
এখানে ঢেউগুলো তীরে আছড়ে পড়ার সাথে সাথে বয়ে আনে ঝিনুক। হাঁটতে হাঁটতে ঝিনুক কুড়ানো এক অনন্য অনুভূতি। এ সমুদ্রসৈকত ভালো লাগার অন্যতম কারণ এটি কোলাহলমুক্ত। সন্ধ্যা নামলে এ সৈকতের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এ সৈকতের বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে সূর্যাস্ত।
লালচে আভায় রঙিন হয়ে ওঠে আকাশ। সূর্য যখন ধীরে ধীরে সাগরের বুকে হারিয়ে যায়; সৃষ্টি হয় এক অনন্য মায়াময় দৃশ্য। এ সৌন্দর্য শুধু অনুভব করা যায়। কোনো ক্যামেরায় এটি ধারণ করা যায় না। যারা নির্জনতা ভালোবাসেন; তাদের জন্য এ সৈকত। যারা নিঃশব্দে প্রকৃতির ভাষা শুনতে চান; তাদের জন্য নডালিয়া আদর্শ স্থান। যাদের মন কেবল শহরের কংক্রিটে আটকে থাকতে চায় না; তাদের জন্য নডালিয়া এক নিঃশব্দ ডাক।
নির্জনতাপ্রেমীরা চাইলে অনায়াসে ছুটির দিনে এ সৈকত থেকে ঘুরে আসতে পারেন পরিবার কিংবা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে। চট্টগ্রাম শহরের একে খান কিংবা অলঙ্কার থেকে বাসে উত্তর বাঁশবাড়িয়া বারো আউলিয়া থানার সামনে চলে আসুন। সেখান থেকে রিজার্ভ ট্যাক্সি কিংবা অটোরিকশায় চলে আসুন নডালিয়া সমুদ্রসৈকতে।
লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম।
এসইউ/জিকেএস