কিছুই জানতেন না তিনি। তাকে এখনই বাংলাদেশের স্পেশালিস্ট ব্যাটিং কোচ করা হতে পারে- এমন চিন্তাও আসেনি মাথায়। বোর্ড থেকেও কেউ তাকে কিছু জানাননি। কারণ, মোহাম্মদ আশরাফুল এখন অবস্থান করছেন কক্সবাজার। সেখানে জাতীয় লিগে বরিশালের খেলা চলছে। বরিশাল কোচ হিসেবে আশরাফুল দলের সঙ্গে সমুদ্র সৈকতের শহরেই অবস্থান করছেন।
সমুদ্র সৈকতের ধারে বসেই রাত সোয়া ১০টা নাগাদ সাংবাদিকদের কাছ থেকে খবর পেলেন, আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে হোম সিরিজে তাকেই করা হয়েছে টিম বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ।
এ যেন স্বপ্ন সত্য হওয়ার মতোই! মোহাম্মদ আশরাফুলের আনন্দ আর ধরে না। মুঠোফোনে জাগো নিউজকে তাৎক্ষণিক অনুভূতি জানাতে আশরাফুল বলেন, অন্য টেস্ট খেলুড়ে দেশ হলে হয়ত আনুষ্ঠানিকভাবে খেলা ছাড়ার পরপরই একটা না একটা অফার আসতো। তবে, আমাদের দেশে সে প্র্যাকটিসটা কম। তাই এত তাড়াতাড়ি জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে জায়গা পাবো, তা ভাবিনি।
আশরাফুল আরও বলেন, সত্যি বলতে কী, আমি এখন জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হবো, আমাকে অত বড় দায়িত্ব দেওয়া হবে- তা চিন্তাও করিনি। আশা ছিল ভবিষ্যতে বয়সভিত্তিক দলগুলোয় কোচিং করাতে পারবো হয়তো। সরাসরি বাংলাদেশ দলের স্পেশালিস্ট ব্যাটিং কোচ হবো, তা ভাবিনি। আপনাদের কাছ থেকেই শুনলাম। জানলাম। আমাকে জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ করা হয়েছে।
জাগো নিউজের সঙ্গে রাত সোয়া ১০টা নাগাদ আশরাফুল যখন মুঠোফোনে কথা বলেন, তখন তার প্রথম কথা ছিল- খুব ভালো লাগছে। আমার জীবনের একটা স্বপ্ন ছিল জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করার। আমি মনে মনে ভাবতাম, চাইতাম আমার খেলোয়াড়ি জীবনে শেখা বিষয়গুলো এবং দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে জানা, বোঝা বিষয়গুলো বর্তমান প্রজন্ম ও ভবিষ্যত প্রজন্মের সঙ্গে শেয়ার করতে। তাদের নিয়ে কাজ করতে। মহান আল্লাহ আমাকে সে সুযোগ দিলেন। আমি আবেগ আপ্লুত। খুব ভালো লাগছে।
আরও পড়ুন
জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হলেন আশরাফুল
নেটে ব্যাটিং করা আর ম্যাচে পারফর্ম করা ভিন্ন জিনিস
সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, প্রাণপণ চেষ্টা থাকবে জাতীয় দলের ব্যাটারদের নিয়ে কাজ করার। তাদের পারফরমেন্স যেন ভালো হয়, সেটাই হবে আমার প্রধান লক্ষ্য।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের সাম্প্রতিক ফর্ম খুব একটা ভালো না। বেশিরভাগই ফর্মে নেই। রান খরায় ভুগছেন।
ওয়েষ্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সাদা বলে ওয়ানডে আর টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে সেভাবে বলতে গেলে কেউই তেমন ভালো খেলেননি। ওদিকে আয়ারল্যান্ড সিরিজ দরোজায় কড়া নাড়ছে। আগামী ১১ নভেম্বর থেকে সিলেটে প্রথম টেস্ট। আর ১৮ নভেম্বর শেরে বাংলায় দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এরপর আবার ৩ ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজও খেলবে টিম বাংলাদেশ।
এত অল্প সময়ের মধ্যে আপনি কি করতে চেষ্টা করবেন এবং আপনার প্রথম কাজ কী হবে- এমন প্রশ্নে আশরাফুলের ব্যাখ্যা, আমার একটা সুবিধা হলো, এখন যারা জাতীয় দলে খেলছেন, তাদের প্রায় সবার সঙ্গেই আমি খেলেছি। তাদের সবাইকে খুব ভালো চিনি-জানি। সবার ব্যাটিং সম্পর্কেই মোটামুটি পরিষ্কার ধারণা আছে।
তিনি বলেন, আমি জানি তারা কে কেন ব্যর্থ হচ্ছে। আর কে কখন কী কারণে ভালো খেলছেন সেটাও আমার জানা। আমি প্রথমে ক্রিকেটারদের সঙ্গে সেটা নিয়েই কথা বলবো। এখনই স্কিল, টেকনিকে না গিয়ে তাদের মানসিকভাবে চাঙ্গা করার চেষ্টা করবো। তাদের সঙ্গে কথা বলবো।
এক ঝাঁক বিদেশি কোচের সঙ্গে কাজ করাটা কোনো বাধা কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের নতুন ব্যাটিং কোচের উত্তর- না, না। তা কেন হবে? আমিতো গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি আসরে এবং বিপিএলে রংপুরের সঙ্গে কাজ করেছি। সেখানেও ভীনদেশি কোচরা ছিলেন। আমার কোনো অসুবিধাই হয়নি। আমি বেশ স্বচ্ছন্দেই কাজ করেছি। সেই অভিজ্ঞতাটা আমার ভালো। আশা করছি, আমার জাতীয় দলে কাজ করার ক্ষেত্রেও সেই অভিজ্ঞতাটাই বেশ কাজে দেবে। তাই আমি চিন্তার কোনো কারণই দেখছি না। আমি আশা করছি নিজের মতো করেই ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করতে পারবো। তাদের মেন্টালি চাঙ্গা করাই থাকবে আমার প্রথম লক্ষ্য।
এআরবি/এএমএ

                        8 hours ago
                        10
                    








                        English (US)  ·