খামারিরাই প্রাণিসম্পদ খাতের প্রকৃত সেলিব্রেটি: মন্ত্রী

4 months ago 77

খামারিরাই প্রাণিসম্পদ খাতের প্রকৃত সেলিব্রেটি বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান। শনিবার (১ জুন) দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন (কেআইবি) অডিটোরিয়ামে ‘বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২৪’ ও ‘ডেইরি আইকন সেলিব্রেশন’ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নবান্ধব বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হলো সমৃদ্ধ, আত্মনির্ভরশীল এবং মেধাসম্পন্ন জাতি গঠন। এ লক্ষ্যে সরকার দেশে দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনসাধারণের প্রয়োজনীয় প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ এবং এ খাতকে রপ্তানিমুখী করে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ ও উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (এলডিপিপি) উল্লেখযোগ্য যা ডেইরি সেক্টরের উন্নয়নের জন্য কাজ করছে।

পুরস্কারপ্রাপ্ত খামারিদের অভিনন্দন জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে যেমন দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করেছেন তেমনি আপনারা নিজেদেরও সমৃদ্ধ করেছেন। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বড় গবেষক খামারি হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্র পরিচালনা, মানুষের কথা ভাবা ও দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এসব কাজের বাইরে যখনই একটু সময় পান তখনই গনভবনে এ ধরনের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। এটি খামারিদের প্রতি তার মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, দুধ শুধু একটি আদর্শ খাবারই কেবল নয় বরং মেধাবী জাতি গঠনে দুধ পান অপরিহার্য। তাই নিয়মিত দুধ পানের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। দুধ যেমন পুষ্টির জন্য অপরিহার্য তেমনি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলার জন্য শেখ হাসিনাও তেমনি অপরিহার্য বলে তিনি এসময় মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, পরবর্তীতে এ ধরনের অনুষ্ঠান পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় করা হবে এবং সে অনুষ্ঠানে খামারিরা প্রধান স্টেকহোল্ডার হবেন। তিনি গুঁড়া দুধ আমদানি নিরুৎসাহিত করার জন্য অধিকহারে শুল্ক আরোপের বিষয়ে খামারিদের দাবিকে সাধুবাদ জানান এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে খামারিদের আশ্বস্ত করেন।

 মন্ত্রী

দেশে তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে এ বছর ডেইরি খামার ক্যাটাগরিতে ২৬টি, পশুখাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্যাটাগরিতে ৯টি, দুধ/মাংস প্রক্রিয়াকরণ ক্যাটাগরিতে ১১টি এবং খামার যান্ত্রিকীকরণ ক্যাটাগরিতে ৫টিসহ মোট ৫১ টি পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রতিটি পুরস্কারের মূল্যমান এক লাখ টাকা।

অনুষ্ঠানে চারটি ক্যাটাগরিতে দেশের দুগ্ধ খাতের ৫১ জন সফল খামারি ও উদ্যোক্তার হাতে এসময় মন্ত্রী ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেন। বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে খামারিদের এ ধরনের সম্মাননা দেওয়া তাদের দুগ্ধ উৎপাদনে আরও উৎসাহিত করবে এবং ফলে এ সেক্টরের উন্নতি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে মন্ত্রী এসময় মন্তব্য করেন।

দিবসটি উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে এবং সারাদেশের জেলা পর্যায়ে র্যালি আয়োজন করা হয়। এছাড়া আগের দিন (শুক্রবার) ঢাকায় দৃষ্টি নন্দন বাইসাইকেল র্যালি আয়োজন করা হয়। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সহায়তায় ঢাকার দশটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল মিল্ক ফিডিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা দানে এগিয়ে আসা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মিল্কভিটা, প্রাণ ডেইরি, আকিজ ডেইরি, ব্রাক ডেইরি এবং রংপুর ডেইরি। এছাড়া এলডিডিপির অর্থায়নে দেশে ৩০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের দুধ পান করানো হয়। ঢাকার বাইরেও প্রকল্পের আওতাভুক্ত ৬১টি জেলায় দিবসটি উপলক্ষে নেওয়া হয় নানামুখী কর্মসূচি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর।

এসএম/এমআইএইচএস/এএসএম

Read Entire Article