ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের ২টি বাসে বোমা হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় আদালতে মামলার আবেদন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত আবুল কাশেম মিলন নামে এক ব্যক্তি। ঘটনার ৭ বছর পর বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ফেনী আদালতে মামলার আবেদন করেন তিনি।
রোববার (১ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে আদালত আদেশ দিতে পারেন বলে বাদী পক্ষের আইনজীবী জানান।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফেরার পথে বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহর মহিপাল এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। একপর্যায়ে যমুনা পরিবহনের একটি বাস ও চৌদ্দগ্রাম ট্রান্সপোর্টের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মামলার বাদী আবুল কাশেম মিলন ছাড়াও লক্ষ্মীপুর জেলার নেয়ামতপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল মালেক ড্রাইভার, বাঞ্ছানগর এলাকার ফারুক ড্রাইভার, নোয়াখালীর চরজব্বর থানার হাজীপুর এলাকার হেদায়েত উল্যাহ ড্রাইভার ও সুধারাম থানার চর শুল্লকিয়া এলাকার হারুনুর রশিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার বাদী যমুনা হাই ডিলাক্স পরিবহনের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলন আদালতে তার জমা দেওয়া আরজিতে এ মামলায় তৎকালীন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকারসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি করেছেন।
মামলায় তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আমিনুল ইসলাম, ফেনী মডেল থানার তৎকালীন ওসি মো. রাশেদ খান চৌধুরী, ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করিম উল্যা বিকম, সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার, ফেনী জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন, দাগনভূঞা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক খানকে আসামি করা হয়।
এছাড়াও ফেনী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আমির হোসেন বাহার, লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, সিরাজুল ইসলাম, ফাজিলপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন, শর্শদী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞা, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মানিক, ধলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার আহমেদ মুন্সি, ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সালাহ উদ্দিন ফিরোজ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হায়দার জর্জ, পৌর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটু, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল আলম মোহনকে আসামি করা হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার ফেনী সদর আমইল আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ মো. শাফায়াতের আদালতে মামলাটি জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার এ বিষয়ে আদালত আদেশ দিতে পারেন।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এফএ/এমএস