খুলনা প্রিন্টিংয়ের শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম তদন্তে বিএসইসি

3 hours ago 8

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ারের দাম ও লেনদেন অস্বাভাবিক হারে বাড়ার কারণ তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি এই বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে ডিএসইর চিফ রেগুলেটরি অফিসার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। চিঠিতে ডিএসইকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিএসইসির উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নানু ভুঁইয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ও লেনদেন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এটির পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ আছে কি না সেটি খুঁজে বের করতে হবে। এছাড়া, সম্প্রতি কোম্পানির লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কারসাজি বা ইনসাইডার ট্রেডিং অথবা অনৈতিক কোনো লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে কি না সেটিও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হলো।

কারখানা ও উৎপাদন বন্ধ থাকা খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ারের দাম সম্প্রতি হু হু করে বেড়েছে। গত ২৩ জানুয়ারি কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৭ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ৩৩ টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ এই সময়ের ব্যবধানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৬ টাকা বা ৩৬১ শতাংশ।

শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও লোকসানে নিমজ্জিত এই কোম্পানিটি কয়েক বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এই কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের দশমিক ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০১৯ সালে ১ শতাংশ নগদ এবং ২০১৫ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।

২০২০ সালের পর বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দিতে না পারায় পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির স্থান হয়েছে পচা ‘জেড’ গ্রুপে। এমনকি কোম্পানিটি নিয়মিত আর্থিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করে না। সর্বশেষ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের ব্যবসায় কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি লোকসান করে ১১ পয়সা।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে না পারা এবং নিয়মিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করা এই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছে ডিএসই। সম্প্রতি ডিএসই থেকে জনানো হয়েছে, শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠানো হয়। জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত বা সংবেদনশীল তথ্য নেই।

এদিকে, ২০২৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করে ডিএসই। পরিদর্শনে ডিএসইর প্রতিনিধিদল দেখতে পায়, কোম্পানিটির কার্যক্রম এবং উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার প্রেক্ষিতে এই তথ্যটি প্রকাশ করেও বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করেছে ডিএসই।

কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার। এর মধ্যে উদ্যোক্তার কাছে ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার আছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৫৯ দশমিক ১৩ শতাংশই আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ১১ শতাংশ শেয়ার আছে।

এমএএস/এএমএ

Read Entire Article