গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি ও নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সেমিনারের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট (সিজিডি)।
সিজিডির নির্বাহী পরিচালক সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহিউদ্দিন হিমেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে কী-নোট স্পীচ প্রদান করেন জবানের সম্পাদক রেজাউল করিম রনি।
সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন কৃষিবীদ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. আলী আফজাল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আহমেদ কামারুজ্জামান মজুমদার, আন্তর্জাতিক যুব নীতি বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচিত ইউএন হ্যাবিটেট উপদেষ্টা এস এম সৈকত, বিএনপি নেতা ড. ফয়জুল হক, সংগঠক ও অ্যাক্টিভিস্ট শরফুদ্দীন, সংগঠক ও এক্টিভিস্ট আলী আহসান জুনায়েদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নিজাম উদ্দিন, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদী, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মোল্যা রহমাতুল্লাহ, বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যের আহ্বায়ক মৃন্ময় মিজান, স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ, স্পীক বাংলাদেশের সংগঠন নাভিদ নওরোজ শাহ, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক সাঈদ আহমেদ সরকার, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, তরুণ চিন্তক ও অ্যাক্টিভিস্ট অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসাইন প্রমুখ।
সেমিনারে ড. আলী আফজাল বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ যেন হারিয়ে না যায়। সেজন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের দুর্বল দিকগুলো আমাদেরকে ধরিয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্র সংস্কার, সংবিধান সংস্কার, প্রশাসন সংস্কার সহ অনেক সংস্কার নিয়ে কথা হচ্ছে। অথচ দুঃখের বিষয় এ বিষয়গুলো নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা নেই। দেশের ১ কোটি ৬৭ লাখ কৃষক যদি সময় মত কৃষি উপকরণ না পায়, তাহলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। সময় মত উপকরণ না পেলে কৃষক বিদ্রোহে দেশ অচল হয়ে যেতে পারে। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের ১৬ বছরের শাসনামলে কৃষকের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ২ লাখ টাকা ভর্তুকির বড় অংশই আত্মসাৎ করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে আত্মসাৎকারীদের বিচারের আওতায় আনতেই হবে। এর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা ও অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হওয়ার দরকার ছিলো, তা এখনো হয়ে উঠেনি। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ঐক্যের ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত জরুরি।
এস এম সৈকত বলেন, ন্যায়বিচার আর ন্যায্যতাভিত্তিক সমাজের অধিকার ধনী-গরিব প্রত্যেক মানুষের রয়েছে। বিগত দিনের অন্যায় আর অন্যায্যতাকে ভুলে যাওয়া চলবে না যেন আগামীর বাংলাদেশ হয় তারুণ্যনির্ভর, সম্পৃতিপূর্ণ, ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ। যুবসমাজকে কর্মমুখী করে না তুলতে পারলে, জনমিতির লভ্যাংশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে বাংলাদেশ। আর বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আমরা টিকতে পারব না। তাই এখনই সামাজিক ন্যায়বিচার, ন্যায্যতা, আর বৈষম্যহীন সুযোগ সৃষ্টির সময়, যেন তরুণ প্রজন্ম রাজনীতিসচেতন থেকেই শিক্ষা ও কর্মমুখী হতে পারে।
সিজিডি'র নির্বাহী পরিচালক সাইদুল ইসলাম বলেন, ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন থেকে বের হয়ে আমাদেরকে রাজনৈতিক বিষয়গুলো রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। আর এই রাজনৈতিক সমাধানের জন্য নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের এখনই যথোপযুক্ত সময়। এই জন্য সকল ইস্যু ভিত্তিক প্লাটফর্মকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের দাবি।