গণহত্যায় সহায়তাকারী সংস্কৃতিকর্মীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন

1 week ago 11

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গণহত্যাকারী ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের নামে গণহত্যায় সহায়তাকারীদের শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্য। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়েছে।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩০টির অধিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা বিপ্লবী কবিতা ও গণসংগীত পরিবেশন করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের নামে কিছু লুটেরা দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচার সরকারের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে কলঙ্কিত করেছে। এমনকি গণহত্যা চলাকালীন তারা তাদের এমন ঘৃণ্য অপকর্ম চালিয়েছে। আমরা অবিলম্বে গণহত্যার দোসরদের শাস্তির দাবি জানাই।

আরও পড়ুন

মানববন্ধন থেকে সংস্কৃতিকর্মীরা ১৩ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো—
১. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গণহত্যাকারী ও দোসরদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
২. শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে হওয়া গুম, খুন, গণহত্যা, আয়নাঘর, ক্রসফায়ার নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীর দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৩. গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা প্রণয়ন ও দ্রুত সময়ে তাদের পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. গণঅভ্যুত্থানে আহতদের উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৫. ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট চিহ্নিত দালাল ও তাদের প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনসমূহে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করতে হবে।
৬. মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করা, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের রাজনৈতিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।
৭. ফ্যাসিবাদের চিহ্নিত দোসরদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, বিচারিক কার্যক্রম ও গণমাধ্যমে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করতে হবে।
৮. সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং বিদেশি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারের সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
৯. ২০০৯ সাল থেকে রাষ্ট্রীয় অর্থে নির্মিত সিনেমা, নাটক, কনসার্টসহ বিভিন্ন উপলক্ষে রাষ্ট্র প্রদত্ত অর্থের হিসাব দিতে হবে।
১০. সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধী ও অপরাধের সহযোগীদের হাত থেকে গণমাধ্যম মুক্ত করতে হবে।
১১. জাতীয় ও জেলাভিত্তিক শিল্পকলা একাডেমি থেকে গণহত্যার সমর্থকদের অপসারণ করে প্রকৃত সাংস্কৃতিক সংগঠকদের নিয়োগ দিতে হবে।
১২. সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এবং
১৩. যোগ্য ও বৈষম্যের শিকার শিল্পী, সাহিত্যিক, কবি, সংস্কৃতিকর্মী ও সাংবাদিকদের সরকারি প্রতিষ্ঠানে পদায়ন করতে হবে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শহিদুল জাহিদ, গীতিকার জি এম জাকির হোসেন, সংস্কৃতিকর্মী কল্লোল শরিফী, আবৃত্তি বিশ্বায়নের উপাচার্য মৃন্ময় মিজান, বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যের কামাল মিনা, আহমেদ শুভ, পারভেজ রানা, শারমিন জুঁই, সায়কা পারভীন প্রমুখ।

এমএইচএ/কেএসআর/এমএস

Read Entire Article