‘গত ১৫ বছর একটি দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ব্যবসা করেছে’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেছেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে আমরা দেখেছি একটি দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ব্যবসা করেছে। তারা এটি দিয়ে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা এ চেতনার ব্যবসা। যেখানে একটি চেতনাকে সামনে রেখে যা ইচ্ছা তা করা সম্ভব। তবে দুর্ভাগ্য হলেও সত্য, সেই দলটিই আবার ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল।’
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবনে বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
আলোচনা সভায় অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব আরও বলেন, ‘আমি পৃথিবীর অনেক দেশে গেছি, সেখানে থেকেছি। তবে কখনো কোনো দেশে দেখিনি সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দেশের ইতিহাস পাল্টে যায়। এমন হয়নি রাজনৈতিক দলগুলো শুধু নিজেদের দলীয় চিন্তায় মগ্ন থাকে। গত ১৫ বছর ধরে আমরা দেখেছি একটি দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ব্যবসা করেছে। তারা এটি দিয়ে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে সেই দলটিই আবার ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল। যেখানে তাদের ডাকে জনস্রোত তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৪ এ এসে তারা গণশত্রুতে পরিণত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এখন নতুন বাংলাদেশকে পুরাতন মগজ দিয়ে চিন্তা করলে চলবে না।’
দিবসটি উপলক্ষে এদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও বদ্ধভূমিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এ ছাড়াও দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে রাবি সাংবাদিক সমিতি, রিপোর্টার্স ইউনিটি, প্রেস ক্লাব, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জাসাসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন।
এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন, আবাসিক হল এবং ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ ছাড়াও দিনটিকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শেখ রাসেল মডেল স্কুলে আনন্দমেলা, বিজয় দিবস প্যারেড, শিক্ষার্থীদের র্যালি, পোস্টার প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হয়।
এদিন বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া মাহফিল এবং সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং শহীদ মিনার মুক্তমঞ্চে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।