গরম কাপড়ের আগাম অর্ডারে সরগরম কেরানীগঞ্জের পাইকারি বাজার

11 hours ago 3

প্রকৃতিতে বিরাজ করছে শীতের আমেজ। দিনে গরম পড়লেও রাতে ও ভোরে কমে যায় তাপমাত্রা। রাজধানী ঢাকার বাইরে শীতের আগমনী বার্তা আরও স্পষ্ট। আবহাওয়া অফিস বলছে, নভেম্বরের মাঝামাঝি উত্তরাঞ্চলের মাধ্যমে শীতের আগমন ঘটতে পারে দেশে।

তবে শীতের আবহ শুরু হলেও এখনো শীতের পোশাক বিকিকিনি সেভাবে শুরু হয়নি। যদিও গরম কাপড় বিক্রির আগাম প্রস্তুতি চলছে দেশজুড়ে। বিশেষ করে কেরানীগঞ্জের পাইকারি মার্কেটে লেগেছে শীতের আমেজ। আগাম পণ্যের অর্ডার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সরেজমিনে দেশের অন্যতম বড় পাইকারি পোশাক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত কেরানীগঞ্জের নিউ মার্কেট, ইসলামপুর রোড, জিঞ্জিরা ও তেঘরিয়া এলাকার গার্মেন্টস ও গুদামগুলো ঘুরে দেখা যায়, পুরোদমে চলছে শীতকালীন প্রস্তুতি।

এসব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, এখনো মূল বেচাকেনা শুরু না হলেও আগাম সরবরাহ ও নতুন স্টকের কাজ চলছে পুরোদমে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে তারা শীতবস্ত্র বিক্রির মূল সময় বিবেচনা করছেন। এই সময়ে উত্তরবঙ্গসহ সব অঞ্চলে হঠাৎ তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা বাড়ে।

আরও পড়ুন
শীতের আগমনে জমে উঠেছে ঢাকার পাইকারি বাজার
কুয়াশা জেঁকে বসবে শিগগির, লেপ-কম্বল প্রস্তুত করছেন তো
খুলনায় জমে উঠেছে গরম কাপড়ের বাজার

শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, পরিবহন খরচ, কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে গত বছরের তুলনায় এবছর উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়ে গেছে বলে জানিয়ছেন তারা। একই সঙ্গে ক্রেতাদের আগ্রহও এখন থেকেই বাড়ছে বলে মনে করছেন তারা।

কেরানীগঞ্জ আলম টাওয়ারের ব্যবসায়ী ও ম্যান্স স্টাইলের মালিক ইমরান জাগো নিউজকে বলেন, এখন মূলত দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অর্ডার নিচ্ছি। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।

মাহি এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার সোহেল বলেন, আমরা সোয়েটার, জ্যাকেট, টুপি আর শিশুদের শীতের পোশাক নিয়ে কাজ করি। এরই মধ্যে রংপুর, কুড়িগ্রাম আর রাজশাহীর ক্রেতাদের কাছ থেকে অর্ডার পেয়েছি।

জেলা পরিষদ মার্কেটের শরিফ হাউজের মালিক কবির বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার শীতবস্ত্রের দাম কিছুটা বেশি। শ্রমিকদের মজুরি ও পরিবহন খরচ বাড়ায় উৎপাদন খরচও বেড়েছে।

আরও পড়ুন
কমছে তাপমাত্রা, অনুভূত হচ্ছে শীত
‘রাজনৈতিক অস্থিরতায় থমকে গেছে ডেনিম শিল্প, আছে মন্দার চাপও’
শীতের মৌসুমে একাধিক মৃদু ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহের আভাস

কেরানীগঞ্জ পাইকারি পোশাক মালিক সমিতির অফিস সচিব সাইফুল ইসলাম বলেন, কেরানীগঞ্জে দেশের সব জেলার ব্যবসায়ী মালামাল কিনতে আসেন। শীত মৌসুমে এখানে প্রতিদিন কোটি টাকার লেনদেন হয়। এবারও আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়েছি, যেন সময়মতো সব বাজারে পণ্য পৌঁছে দেওয়া যায়।

রাজশাহী থেকে আসা খুচরা বিক্রেতা মিজান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সোয়েটার-জ্যাকেট, টুপি, শিশুদের শীতের পোশাক নিয়ে আগাম অর্ডার দিয়েছি, কারণ নভেম্বরের শেষদিকে বিক্রি শুরু হবে। কেরানীগঞ্জে একসঙ্গে অনেক বিক্রেতা, পাইকারি পণ্য পাই, তাই সুবিধা হয়।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা দোকানি শামসুদ্দিন বলেন, আমরা বছরে এক বা দুইবার বড় ধরনের শীতপণ্য স্টক করি। এবার দাম একটু বেশি হলেও লাভ হবে ধারণা করছি। ঠিক সময়ে দোকানে পণ্য আনতে পারলে ক্রেতা পাওয়া যায়। তাই অর্ডার দিচ্ছি এখনই।

নরসিংদী থেকে আসা আরেক খুচরা ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের পোশাকের চাহিদা বাড়ে। কেরানীগঞ্জে পাইকারি দামে ভালো রেডি স্টক পাওয়া যায়। সে কারণে এখানে এসেছি, অর্ডার দিয়ে যাচ্ছি।

টিএইচকিউ/ইএ/এএসএম

Read Entire Article