গরু চুরির আতঙ্কে ঘুম নেই কৃষকদের

3 hours ago 6

রংপুরের পীরগাছায় গরু চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। গত এক মাসে এই উপজেলায় আনুমানিক ৫০টিরও বেশি গরু চুরির খবর পাওয়া গেছে। এই পরিস্থিতিতে কৃষক ও খামারিরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছেন, আবার অনেকে বাধ্য হয়ে গোয়ালঘরেই রাত কাটাচ্ছেন। 

জানা গেছে, পীরগাছার বিভিন্ন এলাকায় গরু চুরির সক্রিয় সিন্ডিকেট কাজ করছে। বিশেষ করে পারুল ইউনিয়নে চোরদের কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। এরা গভীর রাতে পিকআপ ভ্যানে করে গোয়ালঘর ফাঁকা করে দেয়। গত এক মাসে পারুল ইউনিয়নের বিরাহীম গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদের ২টি বিদেশি ষাড়, আব্দুল খালেকের ৩টি বিদেশি ষাড়, আব্দুল আজিজের ২টি এবং গুঞ্জর খাঁ গ্রামের হাফিজুর রহমানের ৬টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। এ ছাড়াও উপজেলা সদরের তালুক ইসাদ (চাকলারপাড়) গ্রামের ব্যবসায়ী নুর আলমের ৩টি, ঝাকুয়াটারী গ্রামের জুয়েল মিয়ার ৪টি, চৌধুরাণীর কুতুব্বাস গ্রামের আইনুল হকের ২টি, ইটাকুমারীর সাতভিটা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ১টি, অন্নদানগরের জগজীবন (মমিন বাজার) এলাকার মতিয়ার রহমানের ৪টি, পেটভাতা গ্রামের আব্দুল জলিলের ৪টি গরু চুরি হয়।

চুরি হওয়া এসব গরুর আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা বলে জানা গেছে। এর মধ্যে তালুক পারুল গ্রামের ভুট্টুর বাড়ি থেকে ২টি গরু অনুসন্ধান করে মালিক নিয়ে গেলেও বাড়ির মালিক পালিয়ে যান। এ ছাড়াও স্থানীয় রুহুল মেম্বারের বাড়ির পাশে থেকে একটি গরু উদ্ধার করেছে পীরগাছা থানা পুলিশ।

বিরাহীম গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, গরুতে আমাদের অনেক স্বপ্ন থাকে, কিন্তু চোরেরা এক রাতেই সব স্বপ্ন ভেঙে দিচ্ছে। থানায় অভিযোগ করেও লাভ হচ্ছে না।

একই গ্রামের হাফিজুর রহমান বলেন, আমার গোয়ালঘর থেকে ৬টি গরু নিয়ে গেছে। বাজারমূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। থানায় অভিযোগ করেছি, কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতি নেই।

স্থানীয়রা জানান, পারুল ইউনিয়নের ফরহাদ হোসেন, তালেব মিয়া ও ভুট্টু মিয়া এই চোর চক্রের মূল হোতা। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। অতীতে তাদের বাড়ি থেকে চোরাই গরু ও জবাই করা গরুর মাংস উদ্ধার হলেও বর্তমানে তারা পলাতক। ভুক্তভোগীরা গরু চুরি বন্ধে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এবং চোরদের দমন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। 

এ বিষয়ে পারুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গরু চোর চক্রের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। গ্রাম পুলিশ দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করেছি, কিন্তু চোরদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছি না।

পীরগাছা থানার ওসি নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, গরু চুরির ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে এবং একটি গরু উদ্ধার করা হয়েছে। চোরদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।  

Read Entire Article