গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নে পারিবারিক কবরস্থানগুলোতে রাতের আঁধারে কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটছে। গত কয়েক দিনে অন্তত ৩০টিরও বেশি কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এতে গ্রামজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গ্রামবাসী এখন রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইউনিয়নের কচুয়া, সরদারপাড়া, আগড়াপাড়া, পূর্ব কচুয়া, পাঠানপাড়া ও তালপট্টি গ্রামের বেশ কয়েকটি পারিবারিক কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরি হয়েছে। বৃষ্টিপাতের সুযোগে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা কবর খুঁড়ে কঙ্কাল নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরদারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছদরুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সম্প্রতি আমার মা মারা গেছেন। আজ (মঙ্গলবার) সকালে এসে দেখি কবর খোঁড়া। কাফনের কাপড় পড়ে আছে, কিন্তু মায়ের কঙ্কাল নেই। আবার মাটি দিয়ে কবর ঢেকে রেখেছি, কিন্তু এই কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’
মানিকগঞ্জ গ্রামের রেজওয়ানুল হক বলেন, কয়েক মাস আগে দাফন করা তার এক আত্মীয়ের কবর থেকেও কঙ্কাল চুরি হয়েছে। কবর খুঁড়ে কঙ্কাল নিয়ে যাওয়ার এই ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক।
- আরও পড়ুন-
- জুলাই আহতের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো জুলাই আন্দোলনকারীকে
- মিরসরাইয়ে পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি
- কুষ্টিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধ, সাতদিন ধরে নিখোঁজ বৃদ্ধ
কচুয়া ইউনিয়নের শামিম মিয়া বলেন, তাদের পারিবারিক কবরস্থান থেকেও একসঙ্গে তিনটি কঙ্কাল চুরি হয়েছে।
সাঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আজহার আলী বলেন, প্রতিদিন কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র হয়ত এসব বিদেশে পাচার করছে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খন্দকার বলেন, প্রতিদিনই কঙ্কাল চুরির বিষয়ে ফোন পাচ্ছি। স্থানীয়রা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সমস্যা সমাধান হবে না।
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম বলেন, কঙ্কাল চুরির বিষয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন পাচ্ছি। তবে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনোয়ার আল শামীম/এফএ/জেআইএম