গাজর উৎপাদনে খ্যাতি রয়েছে মানিকগঞ্জের। অল্প সময়ে অধিক ফলন, অধিক লাভজনক এবং গাজর চাষের উপযোগী হওয়ায় এ ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন চাষীরা। চলতি মৌসুমে জেলার সিংগাইর উপজেলাজুড়ে বাম্পার ফলন হয়েছে গাজরের। তবে কাঙ্ক্ষিত ফলন পেলেও ভালো দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা।
এখন গাজর তোলার মৌসুম। অনুকূল আবহাওয়া ও উত্তম পরিচর্যায় চলতি মৌসুমে জেলার সিংগাইর উপজেলায় গাজরের ফলন ভালো হয়েছে। প্রথম দিকে দাম ভালো পেয়ে লাভবান হলেও পরে দাম কমে যাওয়ায় কৃষক ও ব্যাপারীরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর সিংগাইর উপজেলায় ৯৬০ হেক্টর জমিতে গাজর চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১০ হেক্টর বেশি। ১৫ টাকা কেজি দরে হলেও ৮৬ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার গাজর বিক্রি করতে পারবেন কৃষক।
এদিকে গাজরের ফলন ভালো হলেও দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক ও ব্যাপারীরা। জয়মন্টপ ইউনিয়নের দেওলি গ্রামের কৃষক সমেজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সব বছর একরকম হয় না। এ বছর যারা এরই মধ্যে বিক্রি করতে পেরেছেন তাদের লাভ হবে। গত বছরে যারা লাভ করতে পেরেছেন এ বছর তারা বেশি আবাদ করেছেন। তবে এ বছর ব্যাপারীদের লোকসান হতে পারে।’
দশআনি গ্রামের কৃষক আব্দুল মুতালেব জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর ৬ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছি । প্রতি বিঘা ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। গত বছর ৮ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছিলাম। প্রতি বিঘা এক লাখ টাকা করে বিক্রি করেছিলাম। গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম কম। কৃষকদের মোটামুটি চালান উঠলেও ব্যাপারীদের লাভ হচ্ছে না। দাম বাড়লে লাভ হবে।’
কৃষক খালেক জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তবে যদি দাম কমে যায় তাহলে কৃষক বাঁচবে না।’
গাজর ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল জানান, গত বছর গাজরে লাভ হলেও এ বছর লাভ হচ্ছে না।
সিংগাইর উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, সিংগাইর একটি কৃষি সমৃদ্ধ উপজেলা। এখানে সব ধরনের ফসল হয়, এর মধ্যে অন্যতম গাজর। সারাদেশের মোট গাজর উৎপাদনের ৪০ ভাগ এই উপজেলায় হয়। এ বছর উপজেলার ৯৬০ হেক্টর জমিতে গাজর চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বৃষ্টি কম হওয়ায় গাজরে রোগ বা পোকার আক্রমণ দেখা দেয়নি। ফলে গাজরের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা যদি ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে তাহলে ৮৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার মতো গাজর বিক্রি হবে।
মো.সজল আলী/এফএ/এএসএম