গাজাকে হিরোশিমা-নাগাসাকির সঙ্গে তুলনা করলেন ব্রিটিশ চিকিৎসক
কিছুদিন আগেই গাজার নাসের হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সার্জন ডা. নিজাম মামোদ। এরপর তিনি স্বচক্ষে গাজায় কী দেখেছেন তা যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক ডেভেলপমেন্ট কমিটির কাছে তুলে ধরেন তিনি। অধিকৃত গাজাকে তিনি জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকির সঙ্গে তুলনা করেছেন।
সম্প্রতি আলজাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্কের এজে প্লাস ওই সার্জনের বক্তব্য প্রচার করে। বক্তব্যকালে তাকে বেশ বিমর্ষ দেখা গেছে।
চারদিকে ধ্বংস, যতদূর চোখ যায় মাইলের পর মাইল মাটির সঙ্গে মিশে গেছে ভবন। কিছুই জন্মাচ্ছে না। কোনো মানুষ নেই। এদিক-সেদিক কিছু লুটেরা ছাড়া আর কেউ নেই। গাজায় থাকাকালে ক্ষণে ক্ষণে ড্রোনের শব্দ ভেসে আসায় মামোদ মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, এটা বিপদের প্রতিনিধিত্ব করে। সব সময়ই বিপদ ছিল সেখানে। এ ছাড়া আর যে শব্দ কানে ভেসে আসত, তা ছিল বোমা। এক মাস আমি সেখানে ছিলাম। প্রতি এক বা দুই ঘণ্টা পর পর সেখানে বোমার বিস্ফোরণ শুনতাম।
এমনকি মেডিকেলসামগ্রী গাজার ভেতর নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি তাদের। সীমান্তেই সেগুলো পড়েছিল। ডা. মামোদ বলেন, ব্যথানাশকের অভাবে অপারেশনের পর রোগীদের প্যারাসিটামল খেতে হচ্ছে।
ব্রিটিশ এই ডাক্তার বলেন, ব্যক্তিগত ব্যবহারের বাইরে আমাদের কোনো মেডিকেলসামগ্রী নিতে দেওয়া হয়নি। তখন আমি জানতে চাই, কিছু লোকের জন্য থাইরয়েডের ওষুধ নেওয়া যাবে কিনা? আমাকে এসব ওষুধ নিতে দেওয়া হয়নি। এটা ইচ্ছাকৃতভাবেই করা হয়েছে।
শুধু মেডিকেলসামগ্রী নিতেই বাধা দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি বেসামরিক ব্যক্তিদের তুলেও নিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তেল আবিব কখনও সশস্ত্র ড্রোনের বিষয়টি স্বীকার করেনি। তবে কিছু মিডিয়ার প্রতিবেদনে এ ধরনের ড্রোনের খবর উঠে এসেছে।
এদিকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার থেকেও এ ধরনের বক্তব্য এসেছে। তিনি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের টোকিওতে যে পরিমাণ বোমা ফেলা হয়েছে তার চেয়ে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী বেশি বোমা ফেলেছে।
ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা বা ইউএনআরডব্লিউএর স্বাস্থ্য পরিচালক সেতা আকিহিরোর কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ইশিবা এ মন্তব্য করেন।
আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। তিনি অবরুদ্ধ উপত্যকাটির বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং এটিকে হৃদয়বিদারক বলে অভিহিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি হৃদয়বিদারক যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টোকিওতে মার্কিন বিমান হামলার তুলনায় গাজায় বহুগুণ বেশি বোমা ফেলা হয়েছে।