মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখলের পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এরই মধ্যে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে (আইডিএফ) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে গাজা থেকে সরানোর প্রস্তুতি নিতে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাৎজ বলেন, ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে যাওয়া নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে তার সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকচ করে দেওয়ার ঘটনার মধ্যে কাৎজ বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এ নির্দেশ দিলেন।
কাৎজ বলেন, গাজা থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার বিষয়টি কার্যকর করার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করতে আইডিএফকে আমি নির্দেশ দিয়েছি। গাজাবাসীরা তাদের গ্রহণে রাজি, এমন যেকোনো দেশে তারা চলে যেতে পারেন। তার আরও দাবি, স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ের মতো দেশগুলো গাজার যে কোনো বাসিন্দাকে তাদের দেশে গ্রহণ করতে আইনত বাধ্য।
এর আগে মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাঠিয়ে উপত্যকাটি দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের দখলে নেওয়ার ও এটি ‘সাগর সৈকতের’ অবকাশযাপন কেন্দ্রে পরিণত করার বিস্ময়কর পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ট্রাম্প জানান, গাজার বাসিন্দাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পাঠানো হবে ও গাজাকে দীর্ঘমেয়াদে নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। এ ঘোষণায় মধ্যপ্রাচ্য ও এর বাইরে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও এটিতে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, যারা গাজা ছাড়তে চায়, তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। এটি গাজার জনগণের একটি বড় অংশকে অন্য দেশে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেবে।
অন্যদিকে, এই পরিকল্পনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তারা বলছে, গাজাবাসীকে অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করবে, যা কার্যত জাতিগত নিধনের শামিল হবে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজায় বসবাসরত ২০ লাখেরও বেশি মানুষের বেশিরভাগই তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে চাইবে না। তাই এই পরিকল্পনা আদৌ কার্যকর করা সম্ভব হবে কি না, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে। তাছাড়া ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এটি নতুন সংঘাতের জন্ম দিতে পারে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যাপক চাপে ফেলবে।
সূত্র: সিএনএন
এসএএইচ