গাজাবাসীর জন্য চিকিৎসাসহ যেকোনো ধরনের ভ্রমণের উদ্দেশ্যে দেওয়া সাময়িক ভিসা কার্যক্রম স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (১৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যে স্বল্প সংখ্যক মানবিক-চিকিৎসা সহায়তার ভিসা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো যাচাই করতে এবং ভিসা প্রদানের প্রক্রিয়ায় পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে বেশ কিছু ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংগঠন। প্যালেস্টাইন চিলড্রেন’স রিলিফ ফান্ড (পিসিআরএফ) বলেছে, সিদ্ধান্তটি ‘গুরুতর অসুস্থ ও আহত শিশুদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গিয়ে জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসার সুযোগ প্রায় বন্ধ করে দেবে।’
উল্লেখ্য, এ পদক্ষেপের আগে কট্টর ডানপন্থি কর্মী লরা লুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিসা কর্মসূচি নিয়ে সমালোচনা করে ট্রাম্প প্রশাসনকে এটি বন্ধ করার আহ্বান জানান। এরপর তিনি দাবি করেন, তার চাপের কারণেই ভিসা স্থগিত হয়েছে এবং এর জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন>>
- গাজাবাসীদের জোরপূর্বক দক্ষিণে সরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল
- গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ১৭৬০ জন নিহত
- মিশর-জর্ডান-লেবানন-সিরিয়া নিয়ে ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ চান নেতানিয়াহু
২০২৪ সালেই পিসিআরএফ মোট ১৬৯ জন গাজার শিশুকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নিয়েছে। তারা মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করেছিল।
গাজার চিকিৎসা অবকাঠামোর বড় অংশই ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত। একই সঙ্গে মার্চ থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাদ্য সংকট ভয়াবহ আকার নিয়েছে। জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা ও মানবিক সংগঠনগুলো জানিয়েছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও সতর্ক করেছে, গাজায় অবস্থানরত সাংবাদিকরা এখন অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। জুলাই মাসে বিবিসি, এএফপি, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস ও রয়টার্স যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছিল, স্থানীয় সাংবাদিকরা একই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন, যার খবর তারা বিশ্বকে জানাচ্ছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে স্বীকার করেছিলেন যে গাজায় ‘বাস্তব ক্ষুধা সংকট’ চলছে। তবে তার প্রশাসন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অবস্থানের প্রতি অব্যাহত সমর্থন জানাচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
কেএএ/