এই প্রথম গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে গণহত্যা বলে ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত সংস্থা, যা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ওপর দাঁড়িয়ে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান নাভি পিল্লাই মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান।
পিল্লাই বলেন, গণহত্যা প্রমাণে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্গোজ, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিবৃতিকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে এই ব্যক্তিকে পৃথকভাবে দায়ী করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী এ ঘটনার দায় রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়। সেজন্য বলছি, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেওয়া বক্তব্যের পাশাপাশি এমন কিছু ‘পরোক্ষ প্রমাণ’ রয়েছে, যাতে গণহত্যার বিষয়টি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল কমিশনের এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। জেনেভায় নিযুক্ত ইসরায়েলি কূটনীতিবিদ জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কমিশন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ কাজ করেছে।
কমিশনের ৭২ পৃষ্ঠার আইনি বিশ্লেষণ এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী অনুসন্ধান হিসেবে বিবেচিত হলেও এ সংস্থাটি জাতিসংঘের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলে না। জাতিসংঘ এখনো ‘গণহত্যা’ শব্দটি ব্যবহার করেনি, তবে এ নিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছে।
হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দায়ের করা গণহত্যার একটি মামলা নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর তারা আত্মরক্ষার্থে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। এ হামলায় গাজায় ৬৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানির হাতে ইহুদিরা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়। এরপর ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘে গণহত্যা কনভেনশন গৃহীত হয়। যেখানে বলা হয়েছে কোনো জাতি, বর্ণগত বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ‘সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে’ সংঘটিত অপরাধসমূহ হলো গণহত্যা।