জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস করেছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাস হয়। এতে ১৫৮টি দেশ পক্ষে, ৯টি বিপক্ষে এবং ১৩টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। খবর আল জাজিরা।
প্রস্তাবে গাজার সংঘাতের অবসান ও মানবিক সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৪৪,৮০৫ জন নিহত এবং ১,০৬,২৫৭ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছেন।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি রিয়াদ মানসুর এই প্রস্তাব পাসের পর এক বক্তব্যে বলেন, ‘গাজা এখন মানবতার জন্য এক যন্ত্রণার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’ তিনি বলেন, গাজায় লাখ লাখ মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং সেখানে এখন মানবিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
স্লোভেনিয়ার জাতিসংঘে নিযুক্ত প্রতিনিধি বলেন, ‘গাজা আর নেই, তা ধ্বংস হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতি মানবতার জন্য একটি বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ছাড়া, আলজেরিয়ার ডেপুটি অ্যাম্বাসাডার মন্তব্য করেন, ‘ফিলিস্তিনের দুর্দশা নিয়ে চুপ করে থাকার জন্য বিশ্বকে বড় মূল্য দিতে হবে।’
তবে পাস হওয়া স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি ইসরায়েলের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু রাজনৈতিক দিক থেকে এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। এতগুলো দেশ যখন কোনও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, তখন এটি গ্লোবাল ওপিনিয়নের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হয়, যা আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, যুদ্ধবিরতির জন্য শর্ত থাকতে হবে, বিশেষ করে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি।
একইদিনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবও পাস হয়, যা ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র সমর্থনে ছিল।
প্রস্তাবের মাধ্যমে ইসরায়েলের আইনগত পদক্ষেপের নিন্দা জানানো হয়েছে, যেখানে ইসরায়েল ইউএনআরডব্লিউএ’কে তাদের দেশে নিষিদ্ধ করেছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইসরায়েল যেন এই সংস্থাকে যথাযথ মর্যাদা দেয় এবং তাদের কাজকর্মে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি না করে।