তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জানিয়েছেন, গাজায় একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য তুরস্ক যেকোনো ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) তুরস্কের ক্ষমতাসীন একে পার্টির সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি এ কথা বলেন। খবর রয়টার্স।
এরদোয়ান তুরস্কের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধ করতে এবং একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় তুরস্ক প্রস্তুত রয়েছে। এর পাশাপাশি, তিনি লেবাননে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রশংসা করেছেন।
একইদিনে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য তুরস্ক, মিসর, কাতার, ইসরায়েলসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য এবং এই ব্যাপারে তুরস্কসহ অন্যান্য দেশের সহযোগিতা প্রয়োজন।
এদিকে, তুরস্ক গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানগুলোর তীব্র সমালোচনা করেছে। দেশটি ইসরায়েলের আক্রমণকে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
এর আগেও তুরস্ক হামাসের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করেছে এবং শান্তিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কিছু কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে, যার মাধ্যমে গাজা অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে।
তুরস্কের এক কূটনৈতিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লেবাননে যুদ্ধবিরতি স্থাপন আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও, গাজায় সংঘাতের অবসান না হলে এটি পর্যাপ্ত নয়। তুরস্ক গাজায় একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য আবারও সাহায্য করতে প্রস্তুত।
তুরস্ক এবং ইসরায়েলের মধ্যে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কূটনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে, তবে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক এখনও ছিন্ন হয়নি। তুরস্ক হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে না এবং তাদের শীর্ষ নেতাদের নিয়মিত আতিথ্য দেয়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৪,২৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১০৪,৭৪৬ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এরদোয়ান বলেছেন, ফিলিস্তিনসহ এ অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখতে আমরা ইসরায়েলকে তাদের দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, তুরস্ক গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধ করতে এবং মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য জোর দিচ্ছে। তুরস্ক এই সংকট সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী।
এদিকে, লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় এই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়। এর ফলে, তুরস্কের উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে নতুন আশা দেখা দিয়েছে।