গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাসন ও কাশিমপুর থানা এলাকা এবং শ্রীপুরে পৃথক স্থানে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) গভীর রাতে থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত এসব অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১২ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বাসন থানার ভোগড়া বাইপাস এলাকার পেয়ারা বাগান সংলগ্ন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে পার্ক করে রাখা ভিআইপি পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে বাসটির অভ্যন্তরের আসন ও জানালা পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ভোগড়া মডার্ন ফায়ার স্টেশনের একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার ইকবাল হোসেন বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে প্রথমে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস একসঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন দেওয়ার সময় বাসে কেউ ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, রাতে বাসটি মহাসড়কের পাশে পার্ক করে রাখা হয়েছিল।
অন্যদিকে, একই রাতে কাশিমপুর থানার চক্রবর্তী এলাকায় কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মিনিবাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে বাসটির ভেতরের বেশ কয়েকটি সিট সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
এ ছাড়া শ্রীপুর উপজেলার বেড়াইদের চালা এলাকায় ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে আরেকটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় আধঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ তিনটি ঘটনাতেই বাসগুলো সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। আগুন লাগার পরপরই স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলগুলো ঘিরে ফেলে এবং তদন্ত শুরু করে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার (এডিশনাল ডিআইজি) জাহিদুল হাসান বলেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে তিনটি স্থানে ধারাবাহিকভাবে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনাই আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিস, ডিবি ও সিআইডি যৌথভাবে আলামত সংগ্রহ করেছে। সন্দেহভাজনদের শনাক্তে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং রাত্রিকালীন টহল আরও জোরদার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পরপর তিনটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই ধারণা করছেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কেউ পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, পেট্রোল বা দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে আগুন দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তদন্ত শেষে সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা ও নানা দাবিতে সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটছে। এরই মধ্যে রাতের আঁধারে ধারাবাহিকভাবে বাসে অগ্নিসংযোগে শহরজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

1 hour ago
5








English (US) ·