সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় গালফ ফুড ফেয়ারে অংশ নিতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের ভিসা জটিলতা কাটতে শুরু করেছে। অনেক কোম্পানির প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে ভিসা পেয়েছেন। বাকিরা পর্যায়ক্রমে পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পর থেকে ভিসা পাওয়া শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনে শর্ত মেনেও মিলছিল না ভিসা। চলছিল দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে দেনদরবার। প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের জন্য বিশ্বের অন্যতম এ মেলায় অংশগ্রহণ অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিক্ষোভ করার পর থেকে ভিসা সীমিত করে রেখেছে আমিরাত। সেই জটিলতা এখনো না কাটায় আটকে ছিল ভিসা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘বুধবার দুপুরের পর থেকে অনেক কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিসা এসেছে। বাকিগুলো শিগগির আসবে বলে আমরা আশা করছি।’
১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দুবাইয়ে পাঁচ দিনব্যাপী গালফ ফুড ফেয়ার শুরু হবে। ২০০১ সালের পর থেকে নিয়মিত এ মেলায় অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশি প্রক্রিয়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো। এ মেলা থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানির একটি বড় ক্রয়াদেশ পান তারা।
- আরও পড়ুন
ভিসা জটিলতায় দেশি কোম্পানিগুলোর ‘গালফ ফুড ফেয়ারে’ যাওয়া অনিশ্চিত
গালফ ফুড ফেয়ারে প্রাণ, বিশ্বে বাংলাদেশি খাদ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ছে
এবছর মেলার জন্য প্রতিবছরের মতো অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ পাননি ব্যবসায়ীরা। পরে বাপা নেতারা বিষয়টি ইপিবিকে লিখিতভাবে জানায়। ইপিবি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় মেলায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করে।
যেসব কোম্পানি অংশ নিতে যাচ্ছে
এবারের গালফ ফুড ফেয়ারে ইস্পাহানি ফুডস, হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো, প্রাণ ফুডস, কিষোয়ান স্ন্যাকস, বনফুল অ্যান্ড কোম্পানি, ড্যানিশ ফুড, ফুলকলি ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রিজ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বম্বে সুইটস, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, আকিজ অ্যাসেনশিয়াল, হিফস অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ, ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টস, এসিআই ফুডস, বসুন্ধরা মাল্টি ফুডস প্রোডাক্টসসহ ৪১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
ড্যানিশ ফুডের হেড অব বিজনেস দেবাশীষ সিংহ বলেন, ‘গালফ ফুড ফেয়ার কৃষিপণ্যের রপ্তানিকারকদের জন্য সবচেয়ে বড় আয়োজন। কারণ অফ্রিকা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া- এসব দেশ দুবাইকে মাঝখান ধরে এখানে আসে। এখান থেকে প্রচুর ক্রয়াদেশ মেলে। মেলার মধ্যেও আসে, পরে সারাবছর ধরেও আসে বিদেশিরা। আফ্রিকা থেকে এ মেলার মাধ্যমে আমরা প্রতি বছর ক্রয়াদেশ পাচ্ছি। এটা মেলা ছাড়া সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘ড্যানিশ ফুড ৫৭টি দেশে পণ্য রপ্তানি করে। সবগুলো দেশের ভেন্ডর এদেশে এসে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে না। সেক্ষেত্রে দুবইয়ের এ মেলা সবচেয়ে বড় মিলনকেন্দ্র। যে কারণে ২০১১ সাল থেকে প্রতি বছর আমরা অংশ নিচ্ছি।’
বিভিন্ন ওয়েবসাইড ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের উদ্যোক্তারা এ মেলায় অংশ নেয়। দুবাই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার আয়োজিত গালফ ফুড ফেয়ার বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের প্রদর্শনী।
এখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পরিবেশক প্রতিষ্ঠান নতুন নতুন পণ্য সম্পর্কে জানতে হাজির হয়। শুধু তাই নয়, এ প্রদর্শনী থেকেই মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলের বিপুল ক্রয়াদেশ পায় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।
২০২৩ সালে গালফ ফুড ফেয়ারে অংশ নেয় খাদ্য উৎপাদন, বিপণন ও পরিবেশনের সঙ্গে যুক্ত ১২০ দেশের প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিষ্ঠান।
এনএইচ/এএসএ/জেআইএম