গোপন জামিনেও মুক্তি মিলছে না সাজ্জাদ দম্পতির

গোপন জামিনেও কারামুক্ত হচ্ছে না চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ও স্ত্রী শারমিন তামান্নার। গত সপ্তাহে উচ্চ আদালতের জামিনের চিঠি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে রাজশাহী কারাগার ও ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।  চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার শাহ সৈয়দ শরীফ কালবেলাকে বলেন, গত সপ্তাহে সাজ্জাদ হোসেন ও তার স্ত্রী তামান্না শারমিনের জামিননামার চিঠি পেয়েছি। তার মধ্যে ৩টি সাজ্জাদের এবং ৪টি তামান্না শারমিনের। পরে আমরা জামিননামার কাগজ দুই কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছি। সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা রয়েছে। সাজ্জাদ দম্পতির গোপন জামিনের খবর জানাজানি হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় ফজলে রাব্বী নিহত হওয়া এবং নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর বাড়ির সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় করা দুটি মামলায় সাজ্জাদ ও স্ত্রী শারমিন তামান্নাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ। আদালত সূত্র জানায়, রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদাল

গোপন জামিনেও মুক্তি মিলছে না সাজ্জাদ দম্পতির
গোপন জামিনেও কারামুক্ত হচ্ছে না চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ও স্ত্রী শারমিন তামান্নার। গত সপ্তাহে উচ্চ আদালতের জামিনের চিঠি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে রাজশাহী কারাগার ও ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।  চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার শাহ সৈয়দ শরীফ কালবেলাকে বলেন, গত সপ্তাহে সাজ্জাদ হোসেন ও তার স্ত্রী তামান্না শারমিনের জামিননামার চিঠি পেয়েছি। তার মধ্যে ৩টি সাজ্জাদের এবং ৪টি তামান্না শারমিনের। পরে আমরা জামিননামার কাগজ দুই কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছি। সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা রয়েছে। সাজ্জাদ দম্পতির গোপন জামিনের খবর জানাজানি হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় ফজলে রাব্বী নিহত হওয়া এবং নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর বাড়ির সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় করা দুটি মামলায় সাজ্জাদ ও স্ত্রী শারমিন তামান্নাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ। আদালত সূত্র জানায়, রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চান্দগাঁও থানা-পুলিশ ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও স্ত্রী শারমিন তামান্নাকে খুনসহ আরও দুটি মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) আবেদন করেন। তবে শুনানির তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। সাজ্জাদ ১০টি খুনসহ ১৯ মামলার আসামি। এর মধ্যে চট্টগ্রামে জোড়া খুন, প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী বাবলার আলোচিত খুনও রয়েছে। তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক খুনসহ ৮টি মামলা। সূত্র জানায়, হাইকোর্ট থেকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই দিনে চাঞ্চল্যকর খুনের মামলায় জামিন পেয়েছেন চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না। তিন মাস আগে জামিন পেলেও সঙ্গে সঙ্গে জামিননামা চট্টগ্রাম আদালত কিংবা কারাগারে পাঠানো হয়নি। উল্টো পদে পদে জামিন নিয়ে লুকোচুরির কৌশল অবলম্বন করা হয়। পুলিশ, প্রশাসন ও সাংবাদিকদের থেকে জামিনের বিষয়টি আড়ালে রাখতে পদে পদে কৌশলেরও আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। জামিন পেতে হাইকোর্টে নারী হিসেবে সহানুভূতি পেতে ৪টি মামলাতেই তামান্নার নাম রাখা হয় এক নম্বরে। সাজ্জাদের নাম ছিল আবেদনের দুই ও তিন নম্বরে। বলা হচ্ছে, সাজ্জাদের সন্ত্রাসী পরিচয় কৌশলে আড়ালে রাখা যায় সে চেষ্টা করা হয়। যদিও হাইকোর্ট থেকে কোনো আসামি জামিন পেলে সেই জামিননামা সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে কারাগারে পৌঁছে আসামিকে জামিনে মুক্ত করে আনা হয়। এ ছাড়া হাইকোর্টে ভয়ংকর বা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কেউ জামিন পেলে চেম্বার জজ আদালতে গিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ জামিন স্থগিত করলেও এখানে তা করা হয়নি। মানবাধিকার কর্মী অ্যাড. জিয়া হাবিব আহসান কালবেলাকে বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় আসামির জামিন হয়েছে এটাই স্বাভাবিক। তবে চাঞ্চল্যকর মামলাগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্তত জনগণের কল্যাণের দিক বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই শ্রেয়। তবে মামলায় ফাঁকফোকর থাকলে হত্যা মামলার আসামিদের জামিন হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আমাদের প্রশাসনকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। নির্বাচনের আগে অনেক অপরাধীরা জামিনের সুযোগ ও চেষ্টা চালাবে। জানা গেছে, ৪টি মামলাতেই কোর্ট রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাজ্জাদ ও তামান্নাকে জামিন দিয়েছেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ সুমনের দ্বৈত বেঞ্চ। ১৫ ও ২২ সেপ্টেম্বর জামিন হলেও হাইকোর্টের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. ইউসুফ আলী যথাক্রমে ১৮ সেপ্টেম্বর ও ৫ অক্টোবর স্বাক্ষর করেন। সেই জামিন নির্দেশ চট্টগ্রাম আদালতে এসে পৌঁছে প্রায় আড়াই মাস পর গত ৮ ডিসেম্বর। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী কালবেলাকে জানান, জুলাই অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় ফজলে রাব্বী নিহত হওয়া এবং নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর বাড়ির সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় করা দুটি মামলায় সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ। শুনানির তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী আরও বলেন, যেহেতু তারা দুজনই পৃথক পৃথক জেলা কারাগারে রয়েছেন। তাই তাদের হাজির করে শুনানি হবে, নাকি ভার্চ্যুয়ালি হবে তা আদালত নির্ধারণ করবেন। রাষ্ট্রপক্ষের মত, আসামিরা দুর্ধর্ষ হওয়ায় নিরাপত্তার কারণে ভার্চ্যুয়ালি শুনানি হলে ভালো হয়।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow