গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে

3 months ago 29

গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। তবে গ্রামীণ ব্যাংককে সহযোগিতা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

বুধবার (২৬ জুন) সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে ড. ইউনূসের পক্ষে তার আইনজীবী ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেন।

ভারত সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ড. ইউনূসের বিষয়ে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে, তাই তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আমরা বা আমাদের সরকার লাগেনি। গ্রামীণ ব্যাংক তৈরি হয়েছিল জেনারেল এরশাদের সময়ে। একজন এমডি খোঁজা হচ্ছিল, ড. ইউনূসকে এনে ম্যানেজিং ডিরেক্টর করা হয়। এই ব্যাংক তার নিজের করা না। তিনি সেখানে এমডি হিসেবে চাকরি করতেন এবং বেতন পেতেন। ব্যাংকটি সরকারের সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। টাকা-বেতন সরকারের পক্ষ থেকেই দেওয়া হতো।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মীদের ২০০৬ সাল থেকে ওয়েলফেয়ার ফান্ডের একটি টাকাও দেওয়া হয়নি। তখন তারা মামলা করেছেন, সরকার করেনি। লেবাররা লেবার কোর্টে মামলা করেছেন, সেই মামলায় তার সাজা হয়েছে, আমার কী দোষ? বরং আজ তিনি যেখানে উঠেছেন, তার পেছনে আমিই তো সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছিলাম। তিনি সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছে আমার হাত দিয়ে। আমরা সবাই মিলেই তুলেছি, এখন দোষ আমার!

তিনি বলেন , চাকরিরত অবস্থায় এমনভাবে তিনি ব্যাংকটি পরচালনা করেছেন, এটা তার নিজেরই করা। ওই ব্যাংকের আইনে ছিল, ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এমডি চাকরিতে থাকতে পারবেন। ৬০ বছরের পরেও ১০ বছর ড. ইউনূস আইন ভঙ্গ করে পদে ছিলেন। পরে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক নজরে আনে। তখন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও একজন উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী তাকে অনুরোধ করেন, আপনার বয়স হয়ে গেছে, এরই মধ্যে বেআইনিভাবে ১০ বছর পদে আছেন, আপনি এখানে উপদেষ্টা হিসেবে থাকেন। কিন্তু তিনি এমডি পদ ছাড়বেন না।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ড. ইউনূস অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করেন। দুই মামলাতেই হেরে যান। এখন তার বিরুদ্ধে যে মামলা তা সরকার করেনি।

তিনি বলেন, গ্রামীণ ফোনের ব্যবসাটা আমিই তাকে দিয়েছিলাম। কারণ গ্রামীণ ব্যাংক তখন পতনের দিকে যাচ্ছিল। প্রথমে ১০০ কোটি টাকা, এরপর ২০০ কোটি, পরে আরও ১০০ কোটি টাকা দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকটা চালু রাখার জন্য সহায়তা করি। তিনি প্রস্তাব দিলেন গ্রামীণ ফোনের ব্যবসাটা তাকে দিলে এখান থেকে যে লাভ আসবে, তা দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক চলবে। তাকে জিজ্ঞেস করা উচিৎ, গ্রামীণ ফোনের একটি টাকা গ্রামীণ ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে কি না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু তাই নয়, গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য বিদেশ থেকে অনেক টাকা অনুদান এসেছে। সেখান থেকে কয়টি টাকা গ্রামীণ ব্যাংকে গিয়েছে? ব্যবসা খুলে ব্যবসা করেছে, ট্যাক্স দেয়নি। তিনি যে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছেন, তা নিজেই প্রমাণ করেছেন। যখনই মামলা হয়েছে তখনই কিছু টাকা দিয়েছেন। যখন কিছু টাকা দিলেন, তখনই তো প্রমাণ হয়ে গেলো যে তিনি ট্যাক্স ফাঁকি দেন। এমনকি গ্রামীণ ফোনের কাছ থেকেও কয়েক দফা এভাবে টাকা আদায় করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূসের মাইক্রোক্রেডিট সামিট ক্যাম্পেইনের গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। আমিই কো-চেয়ার হিসেবে অংশগ্রহণ করি, জাতিসংঘে প্রস্তাব আনি। আমিও ভাবতাম এটি মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করে। কিন্তু ধীরে ধীরে আমি দেখলাম, দারিদ্র্য দূরীকরণ নয়, এটি দারিদ্র্য লালন-পালন করে। দিন-রাত কাজ করা দরিদ্রদের উচ্চহারে সুদ দিতে হয়।

এফএইচ/কেএসআর/জিকেএস

Read Entire Article