গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ, পুলিশ দেখে স্ত্রীকে রেখে পালালেন স্বামী

4 hours ago 9
সাতক্ষীরায় গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে থাকা এক এনজিও পরিচালককে আটক করেছে পুলশি। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাতক্ষীরার পুরাতন সাতক্ষীরার মায়েরবাড়ী মন্দিরের পাশের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ। আটক ব্যক্তির নাম আরিফা খাতুন। তিনি প্রিমিয়ার ইসলামী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেডের পরিচালক। একই সঙ্গে তিনি সাতক্ষীরার মাছখোলা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন তার স্বামী কামরুল ইসলাম। তবে তার স্ত্রীকে পুলিশ আটক করা দেখে তিনি পালিয়ে যান। এনজিওটির কর্মী রীণা পারভীনের করা প্রতারণার মামলায় পরিচালক আরিফা খাতুন আটক করা হয়েছে। মামলার বাদী দেবহাটা উপজেলার খেজুরবাড়ীয়া পারুলিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের মেয়ে। রীণা পারভীনের সঙ্গে কথা হলে তিনি কালবেলাকে বলেন, শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকায় অবস্থিত প্রিমিয়ার ইসলামী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিতে ২০১২ সালে মাঠ পর্যায়ে কর্মী হিসেবে যোগদান করেন। পরে ওই এনজিও পরিচালক আরিফা খাতুন ও তার স্বামী ম্যানেজার কামরুল ইসলাম তার মাধ্যমে এনজিওর ডিপিএসের জন্য তার দুই বোন পুলিশ সদস্য রত্না খাতুন ও ঝর্ণা খাতুন এবং হেনা খাতুন, রেজওয়ানা খাতুন, ইউসুপ আলী, আমেনা খাতুন, রেশমা খাতুন, ইমরান ও রফিকুল ইসলাম গংদের কাছে থেকে মোট ৬৪টি হিসাবের মাধ্যমে ৩৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা নেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর পর ডিপিএস-এর মেয়াদ পূর্ণ হলেও তাদের নায্য পাওনা টাকা বুঝিয়ে না দিয়ে বিভিন্নভাবে বিগত আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল এ দম্পতি। দিনের পর দিন দিন গ্রাহকরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা না পেয়ে ক্ষুদ্ধ হতে থাকেন। এ নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় কয়েক দফায় বৈঠক হয়। এক পর্যায়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রাহকদের পাওনা টাকা দিতে স্বীকার হয়ে তারা গ্রাহকের টাকা না দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এক পর্যায়ে বহু হয়রানি ও লাঞ্জনার স্বীকার হয়ে বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার এস আই মহাসিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রায় দুই শতাধিক গ্রাহকের কাছে থেকে সঞ্চয় ও জমা দেওয়া ডিপিএস-এর টাকা এনজিও পরিচালক আরিফা খাতুন ও তার স্বামী ম্যানেজার কামরুল ইসলাম আত্মসাৎ করেছেন। এনজিও কর্মী ও ওই এনজিওর গ্রাহক রীণা পারভীনের দেওয়া লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করা হয়।  তিনি বলেন, উভয়পক্ষকে নিয়ে থানাতে বসা হলেও অভিযুক্তরা মামলাটি গ্রহণ না করার অনুরোধ জানিয়ে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেবেন বলে জানান। পরে তারা গ্রাহকের টাকা না দিয়ে বাদী পক্ষকে হুমকি-ধামকি ও লাঞ্চিত করে স্বামী-স্ত্রী আত্মগোপনে চলে যান। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ড হলে অভিযান চালিয়ে দুপুরে একটি বাড়ি থেকে এনজিও পরিচালকে আরিফা খাতুনকে আটক করা হয়। তবে এনজিওটির ম্যানেজার ও পরিচালকে আরিফা খাতুনের স্বামী কামরুল ইসলাম পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
Read Entire Article