২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার হাইকোর্টের রায়কে বিজয়ের মাসের ‘ন্যায়বিচার প্রাপ্তির একটি সুসংবাদ’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
রোববার (০১ ডিসেম্বর) দুপুরে হাইকোর্টে এ মামলার রায় ঘোষণার পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক আলোচনা সভায় তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে বিজয়ের প্রথম দিনে একটি বিজয়ের খবর আপনাদের দিতে চাই, সেটা হলো- আপনাদের মনে আছে, ২১ আগস্ট একটা গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। সে মামলায় তারেক রহমান সাহেব জড়িত ছিলেন না বিধায় তাকেসহ সবাইকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আমরা বিগত দিনগুলোতে ন্যায়বিচার পাইনি। আমি আজকে ডিসেম্বরের প্রথম দিনে প্রথম একটা সুসংবাদ পেলাম। ইনশাল্লাহ! সামনে আরও সুসংবাদ আমরা আশা করছি।
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লাখ লাখ মামলায় ‘ন্যায়বিচার’ আশা করছেন বলে মন্তব্য করেন মির্জা আব্বাস। ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০ বছর আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলার বহুল আলোচিত মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আসামিদের সবাইকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট।
আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেন। জজ আদালত এ মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল।
‘২১ আগস্টের মামলায় বিদেশি শক্তি যুক্ত’ উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাটা ছিল পরিকল্পিতভাবে কোনো বিদেশি শক্তি দ্বারা। সে গ্রেনেড হামলায় কখনোই বিএনপি ইনভল্ড ছিল না। একটা বিদেশি শক্তি এ অপকর্মটা করে বেগম খালেদা জিয়া এবং আমাদের নেতা বিএনপির এ্যাক্টিং চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফাঁসাতে চেয়েছিল। শুধু ফাঁসাতে চেয়েছিল না, একটা ভুল মিথ্যা মামলা তৈরি করে সাজানো একটি গল্প তৈরি করে সেই গল্পের ওপর ভিত্তি করে তাকে (তারেক রহমান) সাজাও দিয়ে দিয়েছিল। এ মামলায় আরও অনেককে সাজা দিয়েছিল। আজকে রায় দেওয়া হয়েছে যে, তারেক রহমান সাহেব এর মধ্যে জড়িত ছিলেন না, তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, তারেক রহমান আমাদের মাঝে সহি সালামতে দেশে ফিরে আসবেন খুব তাড়াতাড়ি। এজন্য আল্লাহতায়ালা তাকে সুস্থ করেছেন, সুস্থ রেখেছেন এবং খালাস দিয়েছেন। উনার খালাসের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আল্লাহতায়ালা যেন উনাকে দীর্ঘায়ু দান করেন। তিনি যাতে দেশের মানুষের সেবা করতে পারেন।
১/১১-এর সময়ে তারেক রহমানের ওপর তৎকালীন সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমাদের অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান বিদেশে আছেন, উনি অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন বহুদিন এবং দেশে থাকার সময়ে তাকে গ্রেপ্তার করে অনেক অত্যাচার করা হয়েছিল। আপনারা জানেন, চকবাজারের জেলে আমরা এক সঙ্গেই ছিলাম। আমাদের সামনে থেকে উনি আগের রাতে বিদায় নিয়ে গেলেন, তাকে আর দেখিনি বহুদিন। তারপর যখন ফেরত আনল তখন তিনি একেবারেই অসুস্থ। চলতে-ফিরতে পারতেন না। এখন বিদেশে আল্লাহর রহমতে মোটামুটি সুস্থ, যদিও সম্পূর্ণ সুস্থ না। উনি সুস্থ হওয়ার কথা না। কারণ এটা অন্য ধরনের অত্যাচার ছিল।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা হয়। স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, নুরুল ইসলাম মনি, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান, আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ বক্তব্য দেন।