ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে এক কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে শাহবাগ থানার পুলিশ। গ্রেফতার মোস্তফা আসিফ অর্ণব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার বলে জানান শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মনসুর।
ওই ছাত্রী বুধবার শাহবাগ থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে হেনস্তার শিকার হন বলে এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেন।
এদিকে ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেফতার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী অর্ণবের মুক্তির দাবিতে বুধবার মাঝরাতের পর শাহবাগ থানায় জড়ো হন একদল ব্যক্তি, যারা নিজেদের ‘তৌহিদী জনতা’ দাবি করে।
গ্রেফতার ব্যক্তিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থানের ঘোষণা দেন। ভোত রাত ৫টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন।
অর্ণবকে গ্রেফতারের বিষয়ে এর আগে ওসি বলেন, এই ছেলেটি এক ছাত্রীকে হেনস্তা করেছিল। পরে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করে এবং থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করে। তারপর বুধবার তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মধ্যরাতে গ্রেফতার কর্মচারীর মুক্তির দাবিতে থানায় ‘তৌহিদী জনতা’-
বুধবার (৫ মার্চ) মধ্যরাতের পর কিছু ব্যক্তি দলবেধে শাহবাগ থানার সামনে জড়ো হতে থাকেন। তাদের একজন জানায়, তারাবির নামাজের পর তারা এই ব্যক্তির গ্রেফতারের খবর জানতে পারেন। এরপর মধ্যরাতে তারা শাহবাগ থানায় এসে উপস্থিত হন।
- আরও পড়ুন
- ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ফের যৌন হয়রানির অভিযোগ
- পুরুষ করলে মাফ নারী করলে পাপ?
- আমাদের দেশে এমন পোশাক মানানসই কি না: হাইকোর্ট
- রেলস্টেশনে তরুণীকে হেনস্তা, শিলার জামিন চেম্বারে স্থগিত
তার ভাষ্য, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে না ছাড়া পর্যন্ত তারা এখানেই অবস্থান করবেন। এর আগে থানা হাজতে বন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী অর্ণবের সঙ্গে কথা বলেন ও তাকে আশ্বস্ত করেন তারা।
আরেকজন জনান, জোর করে পুলিশ গ্রেফতার যুবক মোস্তফা আসিফ অর্ণবের জবানবন্দি নিয়েছে। তাকে ছেড়ে দিতে হবে। অন্যথায় আমরা এখান থেকে যাবো না।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাহবাগ থানার একজন পুলিশ সদস্য বলেন, ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তাকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠাবে পুলিশ। তিনি জামিন পাবেন কি না সেটি আদালতের ওপর নির্ভর করছে
ফেসবুক পোস্টে যা লিখেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী-
হেনস্তার শিকার ওই ছাত্রীর ফেসবুক পোস্টটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে। পোস্টের সঙ্গে হেনস্তাকারীর ছবিও জুড়ে দিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। তাতেই তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
ফেসবুক পোস্টে ওই ছাত্রী লেখেন, ‘এই লোকটা আজকে আমাকে শাহবাগ থেকে আসার পথে হ্যারাস করেছে। সে আমাকে হুট করে রাস্তায় দাঁড় করায় দিয়ে বলছে আমার ড্রেস ঠিক নাই, আমি পর্দা করি নাই, ইত্যাদি ইত্যাদি এবং তার আচরণ খুবই অ্যাগ্রেসিভ ছিল। পরবর্তীতে তাকে আমি জিজ্ঞাসা করি আপনি কোন হলে থাকেন কোন ডিপার্টমেন্টে পড়েন। সে বলে সে এই ক্যাম্পাসের কেউ না।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি সালওয়ার কামিজ পরে ঠিকমতো ওড়না পরেছিলাম। সে আমাকে বলে আমার নাকি ওড়না সরে গেছে। পরে আমি তাকে বললাম এইটা তো আপনার দেখার বিষয় না, আর আপনার তাকানোও জাস্টিফাইড না। এরপর আমি প্রক্টরকে কল দিতে চাইলে সে দৌঁড় দিয়ে চলে যায়।
টিটি/এমআরএম/এএসএম