ঘন কুয়াশা আর হিমশীতল বাতাস, হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় উত্তরের জেলা নীলফামারীর ডোমারে জনজীবন নাকাল হয়ে পড়েছে। সকাল ১১টা পর্যন্ত দেখা মিলছে না সূর্যের। রাত থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে। দিনের বেলায়ও ডোমার মহাসড়কে যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। এ ছাড়া চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, হিমালয় কাছে হওয়ায় উত্তরের জেলা নীলফামারীতে আগাম দেখা মিলে শীত ও কুয়াশার। এদিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দিনের চেয়ে রাতে অনেক বেশি ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। প্রচণ্ড শীতে কাজে বের হতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
আরও জানা যায়, ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডায় নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত, এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন গবাদি পশু। ফসলের ক্ষেত আর ঘাসের ওপর থেকে টপটপ করে পড়ছে শিশিরবিন্দু। কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কর্মজীবী মানুষ ছুটছে কাজের সন্ধানে।
ডোমার পৌর এলাকার রিকশা চালক মজিবুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন থেকে শীত ও ঠান্ডার কারণে কামাই-রোজগার কমে গেছে। মানুষজন ঠান্ডার কারণে রিকশায় উঠতেছে না। ডাঙ্গাপাড়া এলাকার ভ্যানচালক জিকরুল হক বলেন, ঠান্ডার কারণে অনেক যাত্রী ভ্যানে উঠতে চায় না। এতে আমার আয় কমে গেছে।
চিলাহাটি এলাকার জুয়েল বসুনিয়া বলেন, ডোমার উপজেলা হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় এখানে আগে থেকে ঠান্ডা শুরু হয়। পাশাপাশি কয়েকদিন থেকে কুয়াশা ও হিমেল বাতাস বইছে, অনেকে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
এদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বেড়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী কালবেলাকে বলেন, বৃদ্ধ ও শিশুরা শীতের তীব্রতা ও ঠান্ডা বাতাসের কারণে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।