দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরেই নিজের নির্বাচনী আসন কুমিল্লার মুরাদনগরে শোকরানা মাহফিলসহ নানা কর্মসূচিতে ব্যস্ত বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক ৫ বারের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। এরই মধ্যে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে ভালোবাসার টানে ছুটে যান দেশের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রামের দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি কওমি মাদ্রাসায়।
চট্টগ্রাম সফরকালে কায়কোবাদ বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আওয়ামী স্বৈরশাসকের বিচারিক হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ কয়েকজন শীর্ষ আলেমের কবর জিয়ারত করেন। কায়কোবাদের সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক মাওলানা গাজী মুহাম্মদ ইয়াকুব ওসমানীসহ বিএনপি নেতারা।
গত দুই দিনে তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি বাবুনগর মাদ্রাসায় যান। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান বাবুনগর মাদ্রাসার আলেম-ওলামাসহ হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা।
এ সময় তিনি হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিবউল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। কায়কোবাদ হেফাজতের আমিরের স্বাস্থ্যের খবর নেন এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করেন।
দীর্ঘ আলাপ শেষে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য দোয়া চান।
কাজী কায়কোবাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে হেফাজতের আমির বলেন, এ দেশের আলেম-ওলামারা কায়কোবাদকে খুব ভালোবাসেন। কারণ তিনি সবসময় আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখেন। তার মতো দ্বীনদার পরহেজগার নেতা সব জায়গায় থাকলে দেশের মানুষ উপকৃত হতো। আল্লাহ ও রাসুল (সা.) এবং ইসলামকে নিয়ে কেউ কটূক্তি করার সাহস পেত না।
তিনি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
পরবর্তীতে কায়কোবাদ নানুপুর ওবায়দিয়া মাদ্রাসায় যান এবং মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরীসহ মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় কায়কোবাদকে জাতির খেদমতে আরও সুযোগ দিতে নেক হায়াত কামনা করেন মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী।
এরপর কায়কোবাদ দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান হাটহাজারীর মেখল মাদ্রাসায় গেলে তাকে স্বাগত জানান প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির খলিল আহমদ ক্বুরাইশী, আনোয়ার শাহ আযহারী, মাওলানা মুনির আহমদ, মাওলানা শফিউল আলম, মাওলানা আবদুস সবুরসহ সব ওস্তাদরা অভ্যর্থনা জানান।
এ সময় কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বলেন, আলেম-ওলামারা নবীদের ওয়ারিশ। তাদের সম্মান করলে আল্লাহ খুশি হন। আর তাদের যারা বেইজ্জত করে, জুলুম-নির্যাতন করে আল্লাহ তাদের বেইজ্জত করেন। আলেম-ওলামাদের সম্মান করুন। আল্লাহর বিধানমতে জীবন পরিচালনা করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি শীর্ষ দুই আলেমকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকারের মিথ্যা মামলার খড়গ ও জীবনের হুমকি নিয়ে ১৩ বছর দেশান্তরী থেকে ফেরার পর সর্বপ্রথম আমার মায়ের কবর জিয়ারত করেছি।
সেখান থেকে কায়কোবাদ হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী, আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার সাবেক আমির শহীদ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, মুফতি আজম ফয়জুল্লাহ, জমিরউদ্দীন নানুপুরী, আল্লামা সুলতান আহমদ নানুপুরী, আল্লামা হারুনের কবর জিয়ারত করেন।