চন্দ্রগ্রহণের সময় যে আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন মহানবি (সা.)

1 week ago 10

 

 

চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ আল্লাহ তাআলার নিদর্শন। এটা আল্লাহ তাআলার নির্ধারণ করা প্রকৃতির নিয়মেই ঘটে। দুনিয়ার কারো জন্ম-মৃত্যু বা বিশেষ কোনো ঘটনার কারণে চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ হয় না। 

আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছেলে ইবরাহিমের মৃত্যুর দিন সুর্যগ্রহণ হলে সাহাবিরা বলাবলি করছিলেন যে, নবিজির (সা.) ছেলের মৃত্যুর কারণেই এমনটা ঘটেছে। নবিজি (সা.) সাহাবিদের এই ধারণা সমর্থন করেননি। তিনি সাহাবিদের নিজে সালাতুল কুসুফ বা সূর্যগ্রহণের নামাজ আদায় করেন এবং বলেন, এটা আল্লাহর নিদর্শন, কারো জন্ম বা মৃত্যুর কারণে চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ হয় না। 

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুগে একবার সূর্যগ্রহণ হলো। সূর্যগ্রহণ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্রুত মাসজিদের দিকে ধাবিত হলেন এবং সবাইকে মাসজিদে যেতে বললেন। তারপর সবাইকে নিয়ে নামাজে দাঁড়ালেন এবং নামাজ অনেক দীর্ঘ করলেন। জামাতের নামাজ তিনি এত দীর্ঘ করতেন না। নামাজ শেষ হতে হতে সূর্যগ্রহণ শেষ হয়ে গেল। আল্লাহর রাসুল (সা.) সাহাবিদের সামনে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর প্রশংসার পর বললেন, ‘সূর্য এবং চন্দ্র আল্লাহর অগণিত নিদর্শন সমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন, কারো মৃত্যু কিংবা জন্মগ্রহণের ফলে চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ হয় না। অতএব, যখন তোমরা চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষ করবে তখনই আল্লাহকে ডাকবে, তাঁর বড়ত্ব ও মহত্ব প্রকাশ করবে এবং নামাজে রত হবে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

এই বক্তব্য নবিজি (সা.) সূর্যগ্রহণের প্রেক্ষিতে দিলেও তা চন্দ্রগ্রহণের ব্যাপারেও প্রযোজ্য। বক্তব্যে তিনি সূর্যগ্রহণের পাশাপাশি চন্দ্রগ্রহণের কথাও বলেছেন। তাই সূর্যগ্রহণের মতো চন্দ্রগ্রহণের সময়ও আমাদের কর্তব্য আল্লাহকে স্মরণ করা, নামাজ আদায় করা এবং জিকির ও ইস্তিগফারে মগ্ন থাকা। চন্দ্রগ্রহণকে আল্লাহ তাআলার নিদর্শন মনে করা এবং কোনো রকম কুসংস্কারে বিশ্বাস না করা।

তবে সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণের নামাজে কিছু পার্থক্য আছে। চন্দ্রগ্রহণের নামাজ সূর্যগ্রহণের নামাজের মতো জামাতের সঙ্গে নয় বরং একাকী আদায় করা সুন্নত। তাই চন্দ্রগ্রহণের সময় নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে সমবেত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সবাই নিজ নিজ বাসায় অন্যান্য নফল নামাজের মতোই দুই রাকাত অথবা ইচ্ছে হলে চার, ছয়, আট বা আরও বেশি সংখ্যক রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে পারেন, প্রত্যেক দুই বা চার রাকাত পরপর সালাম ফেরাতে হবে। 

অন্যান্য নফল নামাজের মতো চন্দ্রগ্রহণের নামাজেরও আজান-একামত নেই।

ওএফএফ

Read Entire Article