বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের কমিটি নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মারধর ও রুম ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাহ আমানত হলে। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মো. রমজান হোসাইনের বিরুদ্ধে কোপানোর অভিযোগ তুলেছেন কমান্ডের দপ্তর সম্পাদক ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ দপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হান। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো আরাফাতের বিরুদ্ধে মারধর ও রুম ভাঙচুরের অভিযোগ আনেন রমজান। উভয়ই শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিএফসির শাহ আমানত হল অংশের নেতা।
রোববার (৯ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলে এই ঘটনা ঘটে। হল সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মো. রমজান হোসাইনের বিরুদ্ধে কমিটি না দিয়ে পদ ধরে রাখার অভিযোগ আনছেন আরাফাত। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ কোটা ইস্যুতে ব্যাপারটি আরও বেশি আলোচিত হয়। রমজানের সমালোচনা করে ফেইসবুকে পোস্টও করেন আরাফাত। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুপুর ১২টায় আরাফাতের রুমে যান রমজান। রুমে গিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে আরাফাতকে ধাক্কা ও থাপ্পড় দেন। এসময় আরাফাত হাতে আঘাত পান। পরে আরাফাতের অনুসারীরা শাহ আমানত হলে রমজানের ৩০৯ নম্বর রুম ভাঙচুর করেন। ৩ জনের রুম দখল করে একাই থাকতেন রমজান।
শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক আরাফাত হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, সকালে রুমে শুয়েছিলাম। রমজান এসে চিল্লাচিল্লি শুরু করে। একপর্যায়ে তার হাতে থাকা চাকু দিয়ে আমার হাতে আঘাত করে। আমার হাতে দুইটি সেলাই লাগে। সে দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের সভাপতির পদ বিক্রি করে নানা সুবিধা নিয়ে আসছে। এই কমিটির মেয়াদ ৪ বছর হয়েছে। এগুলোর প্রতিবাদ করে নতুন কমিটি দিতে বলায় সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।
অভিযুক্ত মো. রমজান হোসাইন বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের বর্তমান সভাপতি এবং শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে আমি সবসময় কাজ করেছি৷ সাদাফ খান (সিএফসি গ্রুপের নেতা) ভাইয়ের নির্দেশে কিছু বিপথগামী জুনিয়র আমার রুম ভাঙচুর করে এবং আমার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিয়ে আমাকে ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডকে বিকৃত করে। তাছাড়া তারা মহান মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করে। এর প্রতিবাদ করায় আমার রুম ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সিএফসি গ্রুপের নেতা সাদাফ খান জাগো নিউজকে বলেন, কাউকে নির্দেশ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আরাফাত আমাদের জুনিয়র কর্মী। তাকে আঘাত করার অধিকার রমজানকে দেওয়া হয়নি। এখানে কেউ যদি দোষী হয় আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মাধ্যমে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ অহিদুল আলম বলেন, ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হল প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মারামারির ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ তারা পাননি। অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহমেদ জুনাইদ/এফএ/এএসএম