চবির কাজ পেতে জালিয়াতি: হাইকোর্টে জিকে শামীমের জামিন

4 months ago 60

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৭৫ কোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে যুবলীগ নেতা পরিচয়দানকারী এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করা হয়।

বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

জিকে শামীমকে কেন জামিন দেওয়া হবে না মর্মে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বুধবার (৫ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি একেএম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। জিকে শামীমের পক্ষে ছিলেন সাবেক জেলা জজ ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট হায়দার আলী।

এর আগে জাল কাগজপত্র দাখিল করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবন নির্মাণের ৭৫ কোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জিকে শামীমসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এ মামলাটি করেন দুদকের চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম।

মামলায় জিকে শামীমের সঙ্গে আসামি করা হয় অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল করিম চৌধুরীকে। জিকে শামীম জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ একাডেমিক ভবনের (২য় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবন) দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজের জন্য ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করা হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জিকেবিএলকে তাদের দাখিল করা একক মালিকানাধীন ফার্ম হিসেবে ৭৫ কোটি এক লাখ ২৯৫ টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। দুই বছরের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার শর্তে ওই বছরের ১৪ নভেম্বর চুক্তি হয় তাদের সঙ্গে।

দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জিকেবিএল তাদের দাখিল করা কাগজের সঙ্গে আগের পাঁচবছরে কমপক্ষে একটি ৩৫ কোটি টাকার বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ সন্তোষজনকভাবে সমাপ্তির সনদপত্র জমা দেয়। আগের পাঁচবছরে গড়ে কমপক্ষে ৪১ কোটি টাকার টার্নওভার এবং ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকার লিকুইড অ্যাসেট সংক্রান্ত কাগজপত্রও জমা দেয়।

মো. গোলাম কিবরিয়া শামীম ও মো. ফজলুল করিম চৌধুরী প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে কোম্পানির প্রকৃত নিবন্ধিত নামের সাথে একক মালিকানাধীন ফার্মের নাম সংযুক্ত করে নিবন্ধনের সনদ জমা দেন। কিন্তু এক্ষেত্রে কোনো চুক্তির কাগজপত্র জমা দেননি। এছাড়া নিবন্ধিত প্রকৃত শেয়ার সংখ্যার চেয়ে বেশি শেয়ার দেখানো হয়। ১০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা ও টার্নওভার সংক্রান্ত যে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয় তাও জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির অযোগ্যতা ও অদক্ষতার সুযোগে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে অতি সূক্ষ্ম তথ্যগত জালিয়াতির মাধ্যমে ক্রয় প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব বিস্তার করে ওই কার্যাদেশ হাসিল করে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪০৯/১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

এফএইচ/জেডএইচ/এমএস

Read Entire Article