চলন্ত ট্রেনে সন্তান প্রসব

4 hours ago 2
রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী ‘সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে প্রায় দুই ঘণ্টা কাটালেন এক প্রসূতি ও নবজাতক। তবে রেলওয়ে, ফায়ার সার্ভিস ও রেলযাত্রীদের সহযোগিতায় প্রাণ বেঁচেছে মা ও শিশুপুত্রের।  শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। ট্রেনে সন্তান জন্ম দেওয়া প্রসূতি রেশমা খাতুন (২৭) চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জামদানি গ্রামের মোহাম্মাদ রনির স্ত্রী এবং যশোর শংকরপুর টার্মিনাল এলাকার মৃত শাহাবুদ্দিনের মেয়ে। রেশমা খাতুন জানান, তিনি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সন্তান প্রসবের জন্য শুক্রবার মা মনোয়ারা খাতুনের সঙ্গে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে তারা চুয়াডাঙ্গা থেকে ওঠেন। দর্শনা স্টেশন ছেড়ে আসার পর ঝাঁকুনিতে তার প্রসববেদনা শুরু হয়। একপর্যায়ে ট্রেনেই সন্তান প্রসব করেন। তিনি জানান, ট্রেনে সন্তানের নাড়ি কাটার সুযোগ না থাকায় ওই অবস্থায় তাকে থাকতে হয়। আর প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে তিনিও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ট্রেনটি যশোর স্টেশনে আসলে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। দুপুর ১২টার দিকে তৃতীয় লিঙ্গের কিছু মানুষের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে নবজাতক ও প্রসূতি মাকে নিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তির পর দ্রুত চিকিৎসা প্রদান করায় মা ও ছেলের জীবনশঙ্কা কাটে। কিন্তু এরই মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা প্রসূতি ও নবজাতককে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কাটাতে হয়েছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার বিচিত্র মল্লিক জানান, হাসপাতালে আনার সঙ্গে সঙ্গে নবজাতক শিশুর কডসহ (সন্তানের নাড়ি) রেশমা খাতুনকে ভর্তি করে লেবার ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে সিনিয়র স্টাফ নার্স শিরিনা আক্তার সন্তানের নাড়ি কেটে দেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. রাবেয়া খাতুন জানান, রোগী ওয়ার্ডে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। পরে নবজাতক শিশু ও মায়ের যথাযথ চিকিৎসা ও পরিচর্যা করা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য প্রসূতি রেশমাকে দুই ব্যাগ রক্তও দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মা ও সন্তান দুজনই সুস্থ আছেন।
Read Entire Article