কিংবদন্তি তবলা শিল্পী ওস্তাদ জাকির হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। স্থানীয় সময় রোববার (১৫ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে এ খবর নিয়েছে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
জাকির হোসেনের বন্ধু রাকেশ চৌরাশিয়া জানান, জাকির হোসেন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন। এক সপ্তাহ ধরে সান ফ্রান্সিসকোর হাসপাতালে হৃদরোগজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি ছিলেন।
কিংবদন্তি তবলা শিল্পী আল্লারাখার প্রথম সন্তান জাকির হুসেনের জন্ম ১৯৫১ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে। মাত্র তিন বছর বয়সে বাবার কাছে তবলায় হাতেখড়ি তার৷ ১২ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে প্রথম কনসার্টে যাওয়া৷ সেই থেকে সারা ভারতে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। নিজের বাদ্যশৈলীর মধ্য দিয়ে পূর্ব ও পশ্চিমের সঙ্গীত জগতের মেলবন্ধন ঘটাতে পেরেছিলেন তিনি।
ওস্তাদ জাকির হোসেনকে ভারতীয় ক্ল্যাসিক্যাল সংগীতের একজন পুরোধা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭০ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান জাকির৷ সেখানেই শুরু আন্তর্জাতিক সংগীতাঙ্গনে বিচরণ৷ ১৯৭৩ সালে জর্জ হ্যারিসনের ‘লিভিং ইন দ্যা মেটিরিয়াল ওয়ার্ল্ড’ অ্যালবামে অংশগ্রহণ তাকে এনে দেয় অভূতপূর্ব স্বীকৃতি৷ এরপর জন ম্যাকলাফলিন, মিকি হার্ট, বিল ল্যাসওয়েল, ভ্যান মরিসন, জো হেন্ডারসন ও আরো অনেকের সঙ্গে তবলা পরিবেশন করেন এই কিংবদন্তি।
জাকির হোসেনের সঙ্গীত সাধনার বড় অংশজুড়ে রয়েছে ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত৷ পণ্ডিত রবি শংকর, ওস্তাদ আলী আকবর খাঁ, শিব কুমার শর্মা বা কথক নৃত্যশিল্পী বিরজু মহারাজকে তিনি তার তবলা দিয়ে সঙ্গ দিয়েছেন৷
খ্যাতিমান এই শিল্পী ১৯৯২ ‘মোমেন্ট রেকর্ড’ প্রতিষ্ঠা করেন ৷ যার মাধ্যমে সঙ্গীত অনুরাগীদের উপহার দেন ভারতের ধ্রুপদী সঙ্গীতের খ্যাতিমান সেরা সংগীতশিল্পীসহ সমকালীন বিশ্বসঙ্গীত৷
২০০৬ সালে ‘মোমেন্ট রেকর্ড’ এর মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যালবাম ‘গোল্ডেন স্ট্রিং অফ দ্য সরোদ’ গ্র্যামি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়৷ জাকির হোসেন পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, গ্র্যামি ছাড়াও আরও বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
এমকেআর