যশোরের প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক সংবাদের বিশেষ প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ মারা গেছেন।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
‘গ্রাম-গ্রামান্তরে’র লেখক খ্যাতিমান এই সাংবাদিক পাঁচ দশকের বেশি সময় সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গত কয়েকমাস ধরে তিনি হার্ট ও কিডনিজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গত ২৭ জুলাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে ঢাকার ইব্রাহিক কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে দেশবরেণ্য চিকিৎসক অধ্যাপক এমএ রশিদের তত্ত্বাবধানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন। ১৯ আগস্ট হার্টে তিনটি রিং স্থাপন শেষে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) তিনি যশোরে ফিরে আসেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি মারা যান।
সাংবাদিক রুকুনউদ্দৌলাহর বাবা মরহুম মোকসেদ আলী। তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে নওগাঁয়। সেখানে থাকতেন অগ্রজ আসফউদ্দৌলার কাছে। নওগাঁ কেডি স্কুলে পড়াকালীন বেজে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের দামামা। রাজনৈতিক সচেতন রুকুনউদ্দৌলাহ পরিবারের সঙ্গে চলে যান ভারতে। সেখানে শিলিগুড়িতে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
ধর্ম, মানবতা, সাংবাদিকতা ছাড়া অন্য কোনো পেশায় ঢোকেননি এক মুহূর্তের জন্যেও। দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম দৈনিক সংবাদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন পাঁচ দশক ধরে।
‘সংবাদ’ এ তার নিয়মিত কলাম ‘গ্রাম-গ্রামান্তরে’ বেশ জনপ্রিয়। তিনি চ্যানেল আই, রেডিও টুডেতে কাজ করেছেন। যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্ফুলিঙ্গ, দৈনিক ঠিকানা, দৈনিক রানার, দৈনিক কল্যাণ’ বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। বর্তমানে যশোর থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক যশোরের কাগজের উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন।
এ পেশায় সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ রুকুনউদ্দৌলাহ পেয়েছেন আইডিই পুরস্কার, যশোর শিল্পী গোষ্ঠী পদক, জ্ঞানমেলা পদক এবং বজলুর রহমান স্মৃতিপদক।
তার লেখা শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে ‘গ্রাম-গ্রামান্তরে’, নবযুগ প্রকাশনী থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধে যশোর’, নবরাগ প্রকাশনী থেকে ‘আমার কৈশোর আমার মুক্তিযুদ্ধ’, ‘মানুষের ভাবনা মানুষের কথা’ এবং ‘ছোট ছোট কথা অচেনা মানুষ’, ‘পতাকার অক্ষত ভূমি’ নামে বই প্রকাশিত হয়েছে।
এইচআরএম/এসআর