চাঁদপুরে সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনির বাসভবন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গনি পাটোয়ারীর অফিসে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে আন্দোলনকারীরা। রোববার (৪ আগস্ট) দিনভর দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন।
বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে বেশ কয়েকজন আহত হন। দুপুর ১টার দিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ধাওয়া খেয়ে শিক্ষার্থীরা বাসস্ট্যান্ড থেকে আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নেয়। পরে ড্রোন উড়িয়ে ছাত্রলীগের অবস্থান নিশ্চিত করে ছাত্রলীগের দুপুরের খাবারগ্রহণ অবস্থায় ধাওয়া করে ফের বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেন। ওই সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপে পুলিশ, সাংবাদিক, ছাত্রলীগ ও অনেক শিক্ষার্থী-অভিভাবক আহত হন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দুপুরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একাত্তর টিভির জেলা প্রতিনিধি আল আমিন ভুঁইয়ার ব্যক্তিগত অফিসে প্রবেশ করে ক্যামেরা, কম্পিউটার, আসবাবপত্র ও বাহিরে থাকা মটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
এসময় পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশেকে রাসুল যাওয়াদ, পৌর ছাত্রলীগ নেতা আরাফাত সানি, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আল হেলাল, যুগ্ম-আহ্বায়ক সাদ্দাম, চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম, কনস্টেবল আমেনা বেগম, রুপা, লাভলী, ওবায়েদ উল্লাহ ও মুক্তা এবং জাগো নিউজ প্রতিনিধি শরীফুল ইসলাম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান বাবলু, দীপ্ত টিভি প্রতিনিধি ইব্রাহীম রনি, ঢাকা টাইমস প্রতিনিধি মাজহারুল ইসলাম অনিক, দৈনিক ইলশেপাড় পত্রিকার বার্তা সম্পাদক এসএম সোহেল ও সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন নীরবসহ দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতরা জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বলে জানা গেছে।
বিকেলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনির বাসা ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন দেয়। তারা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গনি পাটোয়ারীর অফিস, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহির হোসেন পাটোয়ারীর বাড়ি, যুবলীগের আবু পাটোয়ারীর অফিস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জহির হোসেন মিজির ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর করে।
চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জহির উদ্দিন মিজি বলেন, আজকে আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বার বার হামলা করে। এতে আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে গুরুতর আহত পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক আশেকে রাসুল যাওয়াদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল-এমরান খাঁন বলেন, দুর্বৃত্তরা আমার দপ্তরেও ভাঙচুর চালায়। অন্য কোথাও ভাঙচুর কিংবা আগুন দিয়েছে কিনা বলতো পারবো না। তবে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান গণি পাটোয়ারী বলেন, আন্দোলনকারীরা সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বাসভবন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা-অগ্নিসংযোগ করেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমর প্রশ্ন তারা কি আন্দোলনকারী নাকি সন্ত্রাসী?
শরীফুল ইসলাম/আরএইচ